Views Bangladesh Logo

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন কতটা বাস্তবসম্মত?

M A  Khaleque

এম এ খালেক

ন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য যে তিনটি আবশ্যিক শর্ত পরিপালন করতে হয় বাংলাদেশ তার সবগুলোই বেশ ভালোভাবে পূরণ করেছে। এরপর কয়েক বছর পর্যবেক্ষণে ছিল বাংলাদেশ। আগামী বছর (২০২৬) বাংলাদেশ চূড়ান্তভাবে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হবে। স্বাধীনতার পর থেকে এটাই হবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় অর্জন। কোনো দেশই স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে নিজেদের চিরদিন ধরে রাখতে চায় না। প্রতিটি দেশেরই আকাঙ্ক্ষা থাকে কীভাবে এবং কত দ্রুততম সময়ের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়া যায়। একটি দেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় থাকলে উন্নত দেশগুলো থেকে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়; কিন্তু সেটা কোনোভাবেই মর্যাদাপূর্ণ নয়। বরং এক ধরনের করুণা থেকেই এটা করা হয়। কোনো দেশই স্বল্পোন্নত বা দরিদ্র দেশ হিসেবে থাকতে চায় না। উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হতে পারা একটি দেশের জন্য অত্যন্ত মর্যাদাকর।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, চাইলেই একটি দেশ রাতারাতি উন্নয়নশীল দেশ বা উন্নত দেশে পরিণত হতে পারে না। বাংলাদেশ আগামী বছর থেকেই উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হতে যাচ্ছে। আমরা আন্তরিকভাবেই চাই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করুক এবং আগামীতে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ কার্যকর উন্নত দেশের তালিকায় যুক্ত হোক; কিন্তু প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যেসব সাফল্য প্রদর্শন করে উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে তা কতটা বিশ্বাসযোগ্য এবং বাস্তবসম্মত?

বিগত সরকারের আমলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিভিন্ন পরিসংখ্যান ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো হতো, যাতে জনগণ তাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষ করে আপ্লুত হয়। এসব পরিসংখ্যানের তেমন কোনো বাস্তব ভিত্তি ছিল না। সেই বিভ্রান্তিকর তথ্যের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশ আগামী বছর থেকে উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হতে চলেছে। উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হলে বাংলাদেশের কী লাভ হবে বা কী ক্ষতি হবে তা চুলচেড়া বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ব্যবসায়িক সমিতি বেশ কিছু দিন আগে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার সময়সীমা ১০ বছর পিছিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছিল; কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্দিষ্ট সময়ে অর্থাৎ আগামী বছর থেকেই উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হতে চাচ্ছে।

রাজধানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য উপস্থাপনকালে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বিগত সরকার আমলে কীভাবে বিভিন্ন পরিসংখ্যান ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো হতো তার বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, বিগত সরকার আমলে অর্থনীতির সাফল্য প্রদর্শনের জন্য যেসব পরিসংখ্যান প্রদর্শন করেছিলেন তার অধিকাংশই ছিল অতিরঞ্জিত এবং কল্পনাপ্রসূত। এসব পরিসংখ্যান দিয়ে বাইরের দুনিয়াকে বুঝানোর চেষ্টা করা হতো যে আমরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কতটা উন্নতি অর্জন করেছি। এমনকি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ‘রোল মডেল’ হিসেবে উপস্থাপনের প্রাণান্তকর চেষ্টা চালানো হয়েছিল। যেমন দৃষ্টান্ত হিসেবে রপ্তানি পরিসংখ্যানের বিষয়টি উল্লেখ করা যেতে পারে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো রপ্তানি আয়ের যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করত তার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া রপ্তানি আয়ের কোনো মিল থাকত না।

প্রতি বছর ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে প্রাক্কলন প্রকাশ করতো বাংলাদেশ সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধি তার চেয়ে অন্তত ১ থেকে দেড় শতাংশ বেশি দেখাত। অর্থবছর শেষে কোনো পক্ষই তাদের অবস্থান থেকে সরে আসত না। নির্দিষ্ট বছরে একটি দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার নিশ্চয়ই দুরকম হতে পারে না। ব্যক্তি খাতে স্থানীয় এবং বিদেশে বিনিয়োগ অতিরঞ্জিত করে দেখানো হতো। মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্বের মতো স্পর্শকাতর পরিসংখ্যান কমিয়ে দেখানো হতো। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মতে, দেশে বর্তমানে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখের মতো। এই পরিসংখ্যান কি পাগলেও বিশ্বাস করবে? সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে থেকে নির্দেশিত হয়ে সেই মোতাবেক বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিসংখ্যান প্রণয়ন করতো।

বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের যে পরিসংখ্যান প্রদর্শন করতো তা বাস্তবসম্মত ছিল না। তারা বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন ফান্ড এবং অন্যান্য খাতে যে ঋণ দিত তাকে যোগ করে রিজার্ভ প্রদর্শন করত; কিন্তু আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদনকালে শর্ত দিয়েছিল যে, রিজার্ভের প্রকৃত হিসাব প্রদর্শন করতে হবে। যে অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে নেই এবং চাইলেই ব্যবহার করা যাবে না তা কখনোই বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ হতে পারে না। তাদের এই শর্তের কারণে এখন বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ নিট বেসিসে হিসাবায়ন করা হচ্ছে।

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিদেশি ‘রোডশো’ করত পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য। এজন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হতো; কিন্তু জাতি জানতে পারেনি এ ধরনের ‘রোডশো’ করার মাধ্যমে পুঁজিবাজারে কী পরিমাণ বিনিয়োগ আহরিত হয়েছিল। বাংলাদেশকে বিনিয়োগবান্ধব একটি গন্তব্য হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো; কিন্তু আমরা কী পরিমাণ বিনিয়োগ আহরণ করতে সমর্থ হয়েছি? সাফল্যের ফাঁপা বেলুন উড়িয়ে হয়তো ক্ষণিকের বাহবা নেয়া যায়; কিন্তু এক সময় সত্যি প্রকাশ পাবেই।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) তাদের এক গবেষণার মাধ্যমে মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে, বাংলাদেশ যদি এই অবস্থায় উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হয় তাহলে অর্থনীতিতে নানা জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে। বিগত সাড়ে ১৫ বছরের একদলীয় শাসনামলে দেশের অর্থনীতি নানাভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। যেসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছে তার বিশ্বাসযোগ্যতা শতভাগ নয়। উপরন্তু বাংলাদেশ যখন উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হবে তখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ কিছু সুবিধা হারাবে। বর্তমানে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশ থেকে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত জিএসপি (জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স) সুবিধা হারাবে। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা প্রদান করবে। তারপর তারা জিএসপি+ নামে নতুন বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করবে; কিন্তু জিএসপি+ সুবিধা পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত পরিপালন করতে হবে বাংলাদেশের পক্ষে তা সম্ভব হবে না।

সেই অবস্থায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিপিডির গবেষণায় বলা হয়েছে, উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার বাংলাদেশের প্রতি বছর যে আর্থিক ক্ষতি হবে তার পরিমাণ ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে। উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাংলাদেশকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে কমার্শিয়াল রেটে সুদ প্রদান করতে হবে। গৃহীত ঋণের শর্তও কঠিন হবে। শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রেই যে এই অসুবিধা হবে তা নয় প্রতিটি দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে একই রকম সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে।

উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যেতে পারে। বাংলাদেশ বর্তমানে যে সামান্য পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ (সরাসরি ও যৌথ উদ্যোগে) আহরণ করছে তার পেছনে যে কারণটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে তা হচ্ছে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজার ক্রমশ বিস্তার লাভ করছে। ভোক্তা শ্রেণির বোগ ব্যয় করার সামর্থ্য ও প্রবণতা বাড়ছে, এটা ঠিক; কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগ আহরণের এটাই একমাত্র কারণ নয়। বাংলাদেশে কোনো বিদেশি উদ্যোক্তা বিনিয়োগ করে যদি পণ্য ও সেবা উৎপাদিত করে এবং তা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশে রপ্তানি করে তাহলে সেই কোম্পানিকে কোনো শুল্ক প্রদান করতে হবে না। কারণ বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশ থেকে জিএসপি সুবিধা পেয়ে থাকে। মনে করি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি চীনে বিনিয়োগ করে উৎপাদিত পণ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কোনো দেশে রপ্তানি করলো। তাহলে এ ক্ষেত্রে কোম্পানিকে তাদের রপ্তানিকৃত পণ্যের মোট মূল্যের ওপর ন্যূনতম পক্ষে ১২ শতাংশ শুল্ক প্রদান করতে হবে।

সেই একই কোম্পানি যদি চীনের পরিবর্তে বাংলাদেশে কারখানা স্থাপন করে পণ্য উৎপাদন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কোনো দেশে রপ্তানি করে তাহলে তাদের কোনো শুল্ক প্রদান করতে হবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর চীন, কানাডা এবং ব্রাজিলের পণ্যের ওপর বর্ধিত হারে শুল্কারোপ করেছে। এতে বিদেশি কোম্পানিগুলো চীনে পুঁজি বিনিয়োগের পরিবর্তে অন্য কোনো দেশে বিনিয়োগ স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এমন কি চীনা কোম্পানিগুলোও অন্য কোনো দেশে বিনিয়োগ স্থানান্তর করতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকার কথা; কিন্তু বাংলাদেশ যদি জিএসপি সুবিধা হারায় তাহলে বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে পুঁজি বিনিয়োগের আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলো আন্তর্জাতিকভাবে উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে নানাবিধ কনসেশন সুবিধা পেয়ে থাকে; কিন্তু যখন তারা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে চলে যাবে তখন সেই সব সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে।

বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য টিকে আছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশেরও বেশি আসে এই দুটি অঞ্চল থেকে। বিশেষ করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাণিজ্য কার্যত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক সময় বাংলাদেশকে কোটা সুবিধা প্রদান করত। কোটা সুবিধার আওতায় দেশটি প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য বাংলাদেশ থেকে আমদানি করত। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা দিয়ে আসছে। ২০০৫ সালে বিশ্বব্যাপী মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোটা সুবিধা বাতিল করে। তদস্থলে বাংলাদেশকে সীমিত পরিসরে জিএসপি সুবিধা প্রদান করে; কিন্তু পরবর্তীতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ এবং শ্রম আইন লঙ্ঘিত হওয়ার অভিযোগ উত্থাপন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দেয়া জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে। উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হলে বাংলাদেশকে প্রতি বছর ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হতে পারে বলে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে এটাই চূড়ান্ত নয়। ক্ষতির পরিমাণ আরও ব্যাপক হতে পারে। কাজেই আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত হবে না।

বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় স্থান দেয়াটাই বড় কথা নয়। সেই অর্জন আমরা ধরে রাখতে পারব কিনা সেটাও বিবেচনা করতে হবে। এমন অনেক দেশের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা যাবে যারা উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও নানা কারণে সেই মর্যাদা হারিয়েছে। আবারও তাদের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় নামিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ নেপালের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছিল। নেপাল এক সময় উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হলেও পরবর্তীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা প্রদর্শন করতে না পারার কারণে দেশটিকে আবারও স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই যা করার ভেবেচিন্তেই করতে হবে।

এম এ খালেক: অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিষয়ক লেখক।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ