‘হাসিনোমিকস’ এর ফলেই খেলাপি ঋণ ও দুর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গত দেড় দশকে দেশে ‘হাসিনোমিকস’ নামের কৃত্রিম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠার ফলে দুর্নীতি ও খেলাপি ঋণ ভয়াবহভাবে বেড়েছে। তিনি দাবি করেন, এরশাদ ও শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থার চরিত্র ছিল একই রকম, এবং উভয় আমলেই রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও প্রশাসনের অপব্যবহারের নজির তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘৯০-এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’ আয়োজিত শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ৩৫তম শাহাদাতবার্ষিকীর আলোচনাসভায় বক্তৃতাকালে রিজভী এসব মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি বিগত সরকারের অর্থনৈতিক নীতি ‘হাসিনোমিকস’ নামে আখ্যায়িত করে কড়া সমালোচনা করেন।
রিজভীর অভিযোগ, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার সংস্কৃতি সৃষ্টি হয়েছিল। তার দাবি, পরিশোধ না করেও নতুন ঋণ নেয়ার সুযোগ থাকায় দেশে সাড়ে ছয় লাখ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ তৈরি হয়েছে। অর্থনীতিকে এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে নতুন সরকারের জরুরি ‘শক্ত পদক্ষেপ’ প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি ব্যাংকের ভোল্টে স্বর্ণ জালিয়াতির ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি প্রশ্ন তোলেন—দুটি ভোল্ট থেকে ৮৩২ ভরি স্বর্ণ বের হওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক। আরও স্বর্ণ লুকিয়ে আছে কি না তা নিয়েও নানা আলোচনা চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনার ঘোষিত সম্পদের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনার অমিল রয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী অভিযোগ করেন, অতীতে প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, র্যাব ও পুলিশসহ রাষ্ট্রযন্ত্র সবই শেখ হাসিনার ‘নির্দেশনায়’ পরিচালিত হয়েছে। তার ভাষায়, দেশে ‘একচ্ছত্র কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্ট শাসন’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, এরশাদ ও শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থার চরিত্রিক মিল রয়েছে এবং উভয় আমলে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, সরকারের ‘ষড়যন্ত্রে’ তা জটিল আকার ধারণ করেছিল এবং হেফাজতে থাকার সময় খাবার বা ওষুধে হস্তক্ষেপের সুযোগ ছিল।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী আমান উল্লাহ আমান। সঞ্চালনায় ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন। বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ আরও নেতারা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে