Views Bangladesh Logo

যুদ্ধবিরতিতে রাজি হামাস, ইসরায়েলের না

গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নৃশংস হামলা বাড়তে থাকায় গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘ ও বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে হামাস। তারা ব্যাপক যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে প্রস্তুত বলে ফের জানালেও এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে গাজা সিটি দখলে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, উভয়পক্ষ পরস্পরের বন্দি বিনিময়ে রাজি হলেও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগে নিজেদের নিরস্ত্রীকরণে ইসরায়েলি শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে হামাস। স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটির এই অনড় অবস্থানের বিপরীতে বুধবারের (৩ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলি হামলা ছিল আরও বেশি ‘বর্বর ও ধ্বংসাত্মক’।

ওই ২৪ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে ইসরায়েলি বোমা হামলায় কমপক্ষে ৭৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের ৪৩ জন কেবল গাজা সিটিতেই মারা গেছেন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গত ২২ মাসে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি ৬৩ হাজার ৮১৯ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বুধবারের বিবৃতিতে ব্যাপক যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়া এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে সমস্ত ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দিতে তাদের প্রস্তুতি পুনর্ব্যক্ত করে হামাস। তবে গাজা যুদ্ধ বন্ধে সর্বশেষ এই প্রস্তাব তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান এবং হামাসের বিবৃতিকে ‘ঘুর্ণায়মান’ বলে অভিহিত করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বিবৃতিতে ইসরায়েলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আরও বলেছে, ‘মন্ত্রিসভার নির্ধারিত শর্তে যুদ্ধ অবিলম্বে শেষ হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে, গাজায় আটক সমস্ত ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির পাশাপাশি হামাসের নিরস্ত্রীকরণও’।

তবে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাতোলু নিউজ জানায়, হামাস মধ্যস্থতাকারীদের উপস্থাপিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত হলেও দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের অংশ হিসাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত নিরস্ত্রীকরণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। সংঘাতে মধ্যস্থতাকারী কাতার জানিয়েছে, ইসরায়েলও তাদের সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত হয়নি, যা গত মাসে হামাস গ্রহণ করেছিল।

ইসরায়েলের এই অভিযান আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ছে। ফ্রান্স, ব্রিটেন, বেলজিয়াম, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়া সহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ এই মাসের শেষের দিকে আসন্ন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তেল আবিবের অনুমান, ৪৮ জন ইসরায়েলি বন্দি এখনও গাজায় রয়ে গেছেন, যার মধ্যে ২০ জন জীবিত। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, ১০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি, যেখানে তারা নির্যাতন, অনাহার ও চিকিৎসা অবহেলার শিকার হচ্ছেন। ফলে অনেকেই মারা গেছেন আর বাকিরা ধুঁকে ধুঁকে মরছেন।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ