গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ছাড়াল ৫৬ হাজার
অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি উপত্যকা গাজাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযান ও বিমান হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা এখন ৫৬ হাজার ২ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হন ৪৩ জন, যাদের ২০ জনই মারা যান যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত গাজা হিউম্যানেটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) এর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে ত্রাণ ও খাবার নিতে গিয়ে।
সোমবার (২৩ জুন) দিনভর এসব হামলায় আহত হন আরও শতাধিক ফিলিস্তিনি। এ নিয়ে ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে গত ২০ মাসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬ হাজার ছাড়ালো। আরও এক লাখ এক লাখ ৩১ হাজার ৩৪২ জন আহত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলি বাহিনী এই সময়ে গাজার ১৫ হাজারের বেশি শিশুকে হত্যা করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, সর্বশেষ হামলায় ৪৩ জনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে এবং নতুন করে আহতদের চিকিৎসা চলছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, অনেকেই এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
মন্ত্রণালয় বলছে, এ পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকেই ইসরায়েলি হামলায় মারা গেছেন পাঁচ হাজার ৬৯০ জন এবং আহতদের সংখ্যা অন্তত ১৯ হাজার ৩০১ জন। অথচ জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়েছিল, যা ওই হামলায় ভেঙে যায়।
অন্যদিকে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে স্থল অভিযান ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সামগ্রিক সামরিক অভিযানে নিহত ইসরায়েলি সৈন্যের সংখ্যা ৪৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। হামাসের হামলায় মারা গেছেন আরও কিছু বেসামরিক নাগরিকও।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে আরও বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি জঙ্গি গোষ্ঠীর যোদ্ধারা গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের দখলকৃত দক্ষিণ গাজা অঞ্চলে ঢুকে সমন্বিত সশস্ত্র হামলা চালিয়ে এক হাজার ১৯৫ জনকে ২৫১ জনকে জিম্মি করার পর এই যুদ্ধ শুরু হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ৩৬ জন শিশুসহ ৭৩৬ জন বেসামরিক ইসরায়েলি, ৩৭৯ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং ৭৯ জন বিদেশি।
গাজার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো এখনো ৫৩ জনকে জিম্মি করে রেখেছে বলে অভিযোগ ইসরায়েলের। তাদের মধ্যে আইডিএফের নিশ্চিত করা কমপক্ষে ৩৩ জনের মৃতদেহ ও ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। আরও তিনজনের সুস্থতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
গত বছরের নভেম্বর মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিটি)। গাজায় নির্বিচারে হামলায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিসি) গণহত্যার অভিযোগেরও মুখোমুখি হয়েছে ইসরায়েল।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে