Views Bangladesh Logo

গাজামুখী ত্রাণবাহী জাহাজ 'ম্যাডলিন' দখল ইসরায়েলের, আটক ১৩ জন

মানবিক ত্রাণ নিয়ে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করা আন্তর্জাতিক জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ আটকে নিজেদের ভূখণ্ডে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ওই জাহাজে থাকা সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও পরিবেশকর্মীসহ ১৩ জনকেও আটক করা হয়েছে।

সোমবার (৯ জুন) ভোরে গাজার উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছার আগেই আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে জাহাজটি থামিয়ে জোর করে আশদাদ বন্দরে নিয়ে যায় ইসরায়েল।

আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বজুড়ে পরিচিত সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, আল জাজিরার সাংবাদিক ওমর ফায়াদ, ফরাসি চিকিৎসক বাপতিস্ত আন্দ্রে, ব্রাজিলিয়ান মানবাধিকারকর্মী থিয়াগো অ্যাভিলা, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসান ও তুর্কি কর্মী সুয়াইব ওর্দু। এ ছাড়া জাহাজটিতে আরও ছিলেন ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন ও নেদারল্যান্ডসের কয়েকজন নাগরিক।

১ জুন ইতালির কাতানিয়া বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল ‘ম্যাডলিন'। গাজার একমাত্র নারী মৎস্যজীবী ম্যাডলিনের নামেই এই জাহাজের নাম রাখা হয়।

জাহাজে ছিল গাজার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম, শিশুদের দুধ, নারীদের স্যানিটারি পণ্য, পানি বিশুদ্ধকরণ কিটসহ নানা জরুরি ত্রাণসামগ্রী।


জাহাজটি পরিচালনাকারী আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের দাবি, তীব্র খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটে থাকা গাজার মানুষের কাছে এসব পণ্য পৌঁছে দেয়াই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাহাজটিকে তারা ‘সেলফি ইয়ট’ বলে ব্যঙ্গ করে আটক করেছে। তাদের দাবি, কিছু তথাকথিত সেলিব্রিটি গণমাধ্যমে প্রচারের জন্য নাটক সাজিয়ে ত্রাণের নামে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চেয়েছিলেন। জাহাজটিকে তাদের জলসীমায় প্রবেশ করতে দেবে না বলেও জানিয়েছে দেশটি।


এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছে বিশ্বজুড়ে নানা মানবাধিকার সংস্থা ও বিশ্লেষকরা। মার্কিন রাটগার্স ইউনিভার্সিটির আইনের অধ্যাপক আদিল হক বলেন, যেভাবে গ্রেটা থুনবার্গসহ অন্যদের হেয় করা হয়েছে, সেটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধের শামিল। মার্কিন মুসলিম সংগঠন ‘সিএআইআর’ও একে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও জলদস্যুতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।


জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রানচেসকা আলবানিজ বলেন, গাজা ইসরায়েলের অধিকারে নেই—তা সত্ত্বেও তারা কার্যত সেখানকার সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে, যা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে সম্পূর্ণ অবৈধ।

তিনি বলেন, গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেয়া বন্ধ করতে হবে।


ইসরায়েল ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়। ফলে সেখানে খাদ্যঘাটতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘ বলছে, গাজার ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ এখন তীব্র খাদ্য সংকটে রয়েছে। অনেক শিশু অনাহারে মারা যাচ্ছে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ