Views Bangladesh Logo

বাজেটে করকাঠামো, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানবান্ধব নয়: ফিকি

বাজেটে প্রবৃদ্ধির কোনো বার্তা না থাকা বিনিয়োগ বিমুখ করবে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। নতুন করদাতা তৈরি না করে পুরোনো করদাতাদের ওপর করের চাপ বাড়ানো দ্বীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলবে কর্মসংস্থানের বাজারে। ফলে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট মূল্যস্ফীতি সামাল দিয়ে নতুন করকাঠামো, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উপযোগী নয় বলে মনে করে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ফিকি)।

সংগঠনটি বলেছে, এবারও বাজেটের সিংহভাগ আয়ের উৎস রাখা হয়েছে কর আহরণে। সংশাধিত কর স্ল্যাব অনুসারে ৭০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা বেতনভূক্ত ব্যক্তির করহার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। একইভাবে কোম্পানির জন্য সর্বনিম্ন করহার ০.৬ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ ও ব্যক্তির জন্য ০.২৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ফলে কোনো কোম্পানি করযোগ্য আয় না করলেও এখন থেকে টার্নওভারের ওপর ১ শতাংশ কর দিতে হবে। এতে লস মেকিং প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং করদাতাদের ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়বে। যা পরোক্ষভাবে ভোক্তা ব্যয় ও জীবনমানে প্রভাব ফেলবে৷

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বুধবার (৪ জুন) বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ সংগঠন ফিকির সভাপতি জাভেদ আখতার বলেন, দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্দেশ্য ও করকাঠামো, দুটিই অনেক ক্ষেত্রে বিপরীতমুখী।

জাভেদ আখতার বলেন, বিনিয়োগ টানতে বিডা বিনিয়োগ সম্মেলন করেছে, যেটি ইতিবাচক। তবে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা নীতি অন্য দেশের তুলনায় ব্যয়বহুল এবং স্থিতিশীল নয়। বাণিজ্য নীতিগুলো বারবার পরিবর্তনে বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তায় ভোগেন এবং বিনিয়োগে আগ্রহী হন না৷

ফিকি’র সাবেক সভাপতি ও বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখনো আস্থা রাখতে পারছেন না। অন্যদিকে দেশের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের নিরাপত্তা পাচ্ছেন না। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বা যেকোনো অস্থিতিশীলতা, দেশে যতো কিছু হয়, সব ‘অত্যাচার’ আসে দেশের বিনিয়োগকারীদের ওপরে’।

তিনি বলেন, ‘আমরা বাজারে কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারছি না। ব্যবসা-বাণিজ্যে ঋণের সুদও তিন বছর ধরে বাড়ছে। ফলে সেটি আর নেয়া যাচ্ছে না’।

‘ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় স্থিতিশীলতার প্রয়োজন। ছোট ছোট পরিবর্তন করে ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে আরও বেশি ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে। তবে যেসব ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন। একই সঙ্গে কাস্টমসের সব কার্যক্রমের শতভাগ অটোমেশন প্রয়োজন’ বলেও মনে করেন রূপালী চৌধুরী।

ফিকি’র সাবেক সভাপতি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কের প্রধান নির্বাহী নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘যেসব কোম্পানি ট্যাক্স দিচ্ছে না তাদের করের চাপ নিতে হচ্ছে, যারা দিচ্ছেন তাদেরকেও। এমনকি যখনই কোনো ঘাটতি পূরণ করতে হচ্ছে, সেটি হঠাৎ করেই নিয়মিত করদাতাদের ওপর আরোপ হচ্ছে। যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদেরই নিতে হচ্ছে’।

এবারের বাজেটে তালিকাভূক্ত কোম্পানির মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানের ১০ শতাংশ কম শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে, তাদের জন্য ২৭ শতাংশের বেশি করহার পুনরায় আরোপকে বৈষম্যমূলক বলেও মনে করেন তারা।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ