Views Bangladesh Logo

যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা ইলন মাস্কের

যুক্তরাষ্ট্রে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের এবং টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও স্পেসএক্স প্রধান ইলন মাস্ক। দেশটির প্রচলিত দুই দলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থায় (রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট) চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতেই তার এ উদ্যোগ বলে জানান তিনি।

শনিবার (৫ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে তিনি ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে তার নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা করেন।

মাস্ক বলেন, দুই-এক অনুপাতে আপনারা নতুন একটি রাজনৈতিক দল চান এবং আমি আপনাদের তা করে দেখাচ্ছি। আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে আজ ‘আমেরিকা পার্টি’র জন্ম হলো।

তবে দলটি এখনো যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইলেকশন কমিশনে (এফইসি) আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত হয়েছে কি না, সে বিষয়টি স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ইলন মাস্কের নতুন দল ঘোষণার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনকেই বড় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র মাস্ক ট্রাম্পের প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেছেন। তবে চলতি বছরের মে মাসে হঠাৎ করেই তিনি প্রশাসন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকেই দুজনের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ শুরু হয়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, পদত্যাগের পেছনে ছিল ট্রাম্প সরকারের নতুন বাজেট বিল নিয়ে মাস্কের অসন্তোষ। ওই ‘বৃহৎ ও চমৎকার বিল’-এ বিশাল পরিমাণ ব্যয় ও কর ছাড় থাকলেও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য কোনো প্রণোদনা রাখা হয়নি। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে মাস্ক ট্রাম্পের নীতিকে “ভবিষ্যৎ-বিমুখ” বলে আখ্যা দেন।

ট্রাম্প-মাস্ক সম্পর্ক এক সময় এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিল যে, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে প্রকাশ্যে তাঁকে সমর্থন করেছিলেন মাস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পকে ফের ক্ষমতায় আনতে মাস্ক প্রায় ‘২৫০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৯০০ কোটি টাকা)’ ব্যয় করেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ট্রাম্পও মাস্কের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাকে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’র প্রধান’ করে নিয়োগ দেন। এই দপ্তরের মূল কাজ ছিল ফেডারেল বাজেটে অপ্রয়োজনীয় খরচ কমাতে পরামর্শ দেয়া।

তবে পদত্যাগের পর ট্রাম্প মাস্ককে নিয়ে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শুরু করেন। সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, ‘ইলন সম্ভবত মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি পাওয়া ব্যক্তি। ভর্তুকি ছাড়া তাকে হয়তো দোকান বন্ধ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হতো।’

এ ছাড়াও মাস্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভর্তুকি খতিয়ে দেখার হুমকিও দেন ট্রাম্প।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে দুইদলীয় রাজনৈতিক প্রাধান্যের মধ্যে নতুন দল টিকিয়ে রাখা বা প্রভাব বিস্তার করা অত্যন্ত কঠিন। অতীতে লিবার্টেরিয়ান পার্টি, গ্রীন পার্টি কিংবা পিপলস পার্টি জাতীয় দলগুলো বেশ কয়েকবার নির্বাচনে অংশ নিলেও মূলধারার প্রার্থী বা দলের কাছে পিছিয়ে পড়েছে। তবে মাস্কের মতো প্রভাবশালী উদ্যোক্তার ‘আমেরিকা পার্টি’ আদৌ কতদূর যেতে পারে, সেটিই এখন দেখার বিষয় বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।

ইলন মাস্ক নিজে দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণ করায় মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। ফলে নতুন দলের নেতৃত্বে কে থাকবেন বা কারা থাকবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ