Views Bangladesh Logo

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সমাজসেবা অধিদপ্তরকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা

Press Release

প্রেস রিলিজ

নস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে অধূমপায়ীদের রক্ষা করতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়কে ‘সম্পূর্ণ ধূমপানমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়েছে। এখন থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা অনুসরণ করে অধিদপ্তরটির সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান।

নারী মৈত্রীর ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ ও সমাজসেবা অধিদপ্তরকে তামাকমুক্ত ঘোষণা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি জানান, কার্যালয়ের ভেতরে যে কোনো ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রি ও ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। ফলে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অতিথিদের কেউই পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাবের শিকার হবেন না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান আরও বলেন, ‘অধূমপায়ীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত অত্যন্ত জরুরি। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অতিথিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমরা দায়বদ্ধ। এই দায়বদ্ধতা থেকেই পুরো অধিদপ্তরকে ধূমপানমুক্ত করার পরিকল্পনা ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত আকারে দেশজুড়ে বাস্তবায়িত হবে’।

বিশেষ অতিথি নারী মৈত্রী মাদার্স ফোরাম এগেইনস্ট টোব্যাকো’র আহ্ববায়ক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব শিবানী ভট্টাচার্য বলেন, ‘তামাকমুক্ত কার্যালয় গড়ার এই ঘোষণা দেশে বড় সামাজিক পরিবর্তনের সূচনা করবে। আশা করি, এটি অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছড়িয়ে পড়বে এবং ভবিষ্যতে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথকে ত্বরান্বিত করবে’।

নারী মৈত্রী ইয়ূথ ফোরাম এগেইনস্ট টোব্যাকে এর সদস্য তাসফিয়া নওরিন বলেন, ‘পরোক্ষ ধূমপানে বছরে তিন কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা কোনোভাবেই পরোক্ষ ধূমপানের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। রেস্টুরেন্টসহ পাবলিক প্লেসগুলোতেও ধূমপানের নির্দিষ্ট স্থান রাখা আছে। সেগুলো থেকেও অধূমপায়ীরা পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের দেয়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলোতে বিষয়টির সমাধান রয়েছে। সেটি দ্রুত পাসের দাবি জানাই’।

অনুষ্ঠানের সভাপতি নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি বলেন, ‘২০০৪ সালে বাংলাদেশ প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলে (এফসিটিসি) স্বাক্ষর করে এবং ২০০৮ সালে এর ৫.৩ ধারা বাস্তবায়নের গাইডলাইনেও সম্মতি দেয়। এই ধারায় বলা হয়েছে, তামাক কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থ থেকে নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা রাখতে হবে। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলো এখন ওই কমিটিকে নানাভাবে প্রভাবিত ও এই প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তামাক কোম্পানির সাথে বৈঠকের সিদ্ধান্তও নিয়েছে’।

জনস্বাস্থ্য রক্ষার স্বার্থে এনবিআরের সিদ্ধান্ত বাতিল ও দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাস করার দাবিও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে ছিলেন নারী মৈত্রী টিচার্স ফোরাম এগেইনস্ট টোব্যাকে এর আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম, সহ-আহ্বায়ক শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তনুশ্রী হালদার এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে নারী মৈত্রী টোব্যাকো কন্ট্রোল প্রজেক্টের প্রকল্প সমন্বয়কারী নাসরিন আক্তার মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনে তামাকের ভয়াবহতা তুলে ধরে জনস্বার্থে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন। বিদ্যমান আইনের পরিপন্থি যে কোনো তামাক সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম প্রতিরোধ ও প্রতিহত করা এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে জবাবদিহি নিশ্চিতে বেশ কিছু সুপারিশও তুলে ধরেন তিনি।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ