বাংলাদেশে শুঁটকি রপ্তানি বন্ধে বিপাকে ভারতের হাজারো পরিবার
বাংলাদেশে শুঁটকি মাছ রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চলের শুঁটকি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হাজারো পরিবার। ফ্রেজারগঞ্জ, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা ও বকখালির মতো উপকূলবর্তী এলাকার মানুষ মূলত শুঁটকি ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। তবে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলমান টানাপোড়েনে প্রভাব পড়েছে এই রপ্তানির ওপর।
সেখানকার ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, সমুদ্র ও নদী থেকে মাছ ধরে তা শুকিয়ে বছরের একটি বড় সময়জুড়ে বিক্রি হতো বাংলাদেশে। কিন্তু বর্তমানে সেই রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুঁটকি মাছ মজুত হয়ে আছে, বাজার নেই, আয়ও নেই। অনেকে বলছেন, বছরের সঞ্চয় এই ব্যবসা থেকেই হতো, কিন্তু এখন পরিবার চালানোই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুধু ব্যবসায়ী নয়, কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শুঁটকি উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত মৎস্যজীবী, শ্রমিক ও পরিবহনকর্মীরাও। বর্ষা মৌসুমের শুরুতে এই সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘সরকার কৃষক, জেলেদের সাহায্য করে, আমাদের কথাও ভাবা দরকার। আমরা সাহায্য চাই না, কাজ করতে চাই—শুধু বাজারটা খুলে যাক।’
তারা বলছেন, এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে অদূর ভবিষ্যতে বহু পরিবারকে অনাহারে দিন কাটাতে হতে পারে।
বাংলাদেশে শুঁটকি রপ্তানি পশ্চিমবঙ্গের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা। ভারতের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে রাজ্যে ১৪ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন হয়েছিল। যার বড় একটি অংশ বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয়। কেরালার ধাঁচের শুঁটকির বাংলাদেশে বিশেষ চাহিদা রয়েছে। তবে ২০২৫ সালে এই রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উৎপাদনের পরিমাণও ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এটি শুধু ব্যবসায়িক ক্ষতি নয়, বরং একটি সামাজিক সংকটও। সরকার যদি দ্রুত হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে সুন্দরবনের উপকূলবর্তী এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে