স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে বারবার আঘাত হেনেছে স্বৈরাচার: তারেক রহমান
স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশে বারবার স্বৈরাচার গণতন্ত্রকে ব্যাহত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে সোমবার ফেসবুক পোস্টে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই অভিযোগ করেন।
তারেক রহমান বলেন, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যম নিষিদ্ধ করা, বাকস্বাধীনতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা, জালিয়াতির মাধ্যমে নির্বাচন করা এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘নিরঙ্কুশ ক্ষমতা লাভের জন্য একটি ভীতি ও স্বৈরাচারী পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে বারবার স্বৈরাচার আঘাত হেনেছে এবং গত দেড় দশকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের উত্থান গণতন্ত্রকে শ্বাসরুদ্ধ করে জাতিকে বন্দি করে রেখেছে।’
তারেক রহমান বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা বা সমুন্নত রাখার যেকোনো প্রচেষ্টাকে পরিকল্পিতভাবে চূর্ণবিচূর্ণ করেছে বর্তমান সরকার। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে আপস করতে বাধ্য করা হয়েছে।
এবারের আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অ্যাকশন বাই অ্যাকশন জেন্ডার ইকুয়ালিটি অর্জনের’ কথা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজে সব লিঙ্গের মানুষের সমান অধিকার থাকা জরুরি।
তারেক রহমান বলেন, একটি গণতন্ত্রে সব লিঙ্গের মানুষের সমান অধিকার, সুযোগ এবং মর্যাদা প্রাপ্য। লিঙ্গ সমতা একটি মৌলিক মানবাধিকার, যা সম্মিলিত পদক্ষেপের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বাংলাদেশের এবং বিশ্বের গণতন্ত্রের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান।
তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। আহতদের প্রতি আমার আন্তরিক সহানুভূতি এবং বিশ্বের সকল গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষকে শুভেচ্ছা জানাই।
ফেসবুক বার্তায় তিনি তার বাবা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বাকশালের একদলীয় শাসনের পর বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য কৃতিত্ব দিয়ে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচারী শাসনের ‘নিষ্ঠুর আক্রমণ’ সহ্য করেও সেই গণতান্ত্রিক ধারাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ৫ আগস্ট একটি ‘ভয়ংকর স্বৈরাচারী’ সরকারের পতন হয়, যা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য জাতীয় ঐক্য এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন, বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োগের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সবশেষে ন্যায়বিচার, রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও সমান সুযোগের ওপর ভিত্তি করে একটি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য আশা প্রকাশ করেন তারেক রহমান।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে