Views Bangladesh Logo

নেপালে বিক্ষোভে পুলিশের গুলি, সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ১৯

নেপালে জেন-জিদের বিক্ষোভে সহিংসতা ও পুলিশের গুলিতে নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ জনে। দেশজুড়ে হাসপাতালগুলোতে কমপক্ষে ৩৪৭ জন আহত বিক্ষোভকারী চিকিৎসাধীন।

২৬টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তরুণদের বিক্ষোভে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গুলি চালায় পুলিশ। এর আগে দুপুরে কারফিউ ও বিক্ষোভকারীদের দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ জারির পরও সহিংসতা-সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে।

নিয়ম মেনে নিবন্ধন না করায় ফেসবুক, এক্স এবং ইউটিউবসহ প্রধান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সকালে কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েক হাজার তরুণ। ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেয়া জেন-জি তরুণদের এই বিক্ষোভ দুপুরের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে পোখরা, বুটওয়াল ও বিরাট নগর, ভৈরবাওয়া, ভারতপুর, ইতাহারি ও দমকসহ বিভিন্ন শহরেও।

হাসপাতালের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট জানায়, কেবল কাঠমান্ডুর বিভিন্ন হাসপাতালেই কমপক্ষে ১৭ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে জাতীয় ট্রমা সেন্টারে আটজন, এভারেস্ট হাসপাতালে তিনজন, সিভিল হাসপাতালে তিনজন, কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন এবং ত্রিভুবন টিচিং হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সুনসারির ইতাহারিতে বিক্ষোভের সময় গুলিতে আহত দুজনও মারা গেলে দেশজুড়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯ জনে।

বিক্ষোভ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই কাঠমান্ডুর নিউ বানেশ্বরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যারিকেড ভেঙে সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়েন তরুণেরা। কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশ গার্ড হাউসেও উঠে গেলে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনী। তাতেও কাজ না হলে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছুড়তে শুরু করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ তাদের ঠেকাতে বলপ্রয়োগ করে।

পরে স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটার পর কাঠমান্ডুসহ কয়েকটি জেলায় কারফিউ জারি করে কর্তৃপক্ষ। তবে এতেও সহিংসতা ও সংঘর্ষ না কমায় পুলিশ গুলি ছোড়ে।

এখনও সংসদ ভবন থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যেখানে বিক্ষোভ সবচেয়ে তীব্র, সেখানে জনসমাগম ও চলাচল সীমিত করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে আহতদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। কাঠমান্ডু ও অন্যান্য শহরের প্রধান প্রধান এলাকায় টহল দিচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।

একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বহু রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন। এভারেস্ট হাসপাতালের অনিল অধিকারী বলেন, চারজনের অবস্থা গুরুতর আর ট্রমা সেন্টারের ডা. দীপেন্দ্র পাণ্ডে জানান, ১০ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। তাদের মাথা ও বুকে গুলির ক্ষত আছে।

এদিকে নেপালে অস্থিরতার জেরে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারতও। ভারত-নেপাল সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি)। নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সতর্কতা রক্ষায় অতিরিক্ত কর্মীও মোতায়েন করেছে আধা-সামরিক বাহিনীটি।একই ধরনের বিক্ষোভ দেশের বড় শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ