ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত বেড়ে ৬০৮৮৯ জন, ‘দুর্ভিক্ষে’ ১৭৫ জন
গত ২৪ ঘন্টায় গাজাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ১১৯ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ বিভিন্ন হাসপাতালে আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন আগের হামলায় মারা যাওয়া ১৫ জনও। আহত আরও ৮৬৬ জনকে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া অবরুদ্ধ উপত্যকায় জোরপূর্বক অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন আরও ৬ জন ফিলিস্তিনি।
হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন বা অন্য ধ্বংসস্তূপগুলোর নিচ থেকে ১৫ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এছাড়া নিখোঁজদের নিয়ে বিচারিক কমিটির সংগৃহীত তথ্য অনুমোদনের পর মোট মৃতের সংখ্যায় আরও ২৯০ জনকে যোগ করায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় ২২ মাসে নিহত দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৮৮৯ জনে এবং আরও অন্তত এক লাখ ৪৯ হাজার ৫৮৮ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে দুর্ভিক্ষে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৫ জনে, যার মধ্যে ৯৩ জনই শিশু। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, গাজায় ৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। জাতিসংঘ, সাহায্য সংস্থা এবং বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে সংকট নিরসনে আরও ত্রাণের ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেয়ার আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েলি সরকার তা প্রত্যাখ্যান করায় সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, প্রয়োজনীয় মানবিক সাহায্য পৌঁছে দিতে যুদ্ধে ‘সাময়িক বিরতির’ ঘোষণা দিয়েও গাজাজুড়ে বিমান ও ড্রোন হামলা এবং স্থল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। রোববার (৩ আগস্ট) ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত এসব হামলায় নিহত হয়েছেন ৬৯ জন ফিলিস্তিনি, যাদের ৩৭ জন যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে খাবারের জন্য এসেছিলেন। উদ্ধার হওয়া বাকি ৫০ জনের মরদেহের মধ্যে ২৮ জন নিহত হন শনিবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে রাতভরের হামলায়, যাদের ২৪ জন ত্রাণপ্রার্থী।
ওই ২৪ ঘণ্টায় সাহায্য চাইতে গিয়ে কমপক্ষে ৬৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়া ছাড়াও সেনাদের গুলিতে আহত হয়েছেন অন্তত ৫১১ জন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে ইসরায়েল সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে গাজার বিভিন্ন এলাকায়।
চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশের চাপে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও ১৮ মার্চ থেকে ফের সামরিক অভিযান চালাচ্ছে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এই অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৯ হাজার ৩৫০ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৫৪৭ জন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে