ভারতে বিরল খনিজ রপ্তানি করবে চীন
ভারত ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কে বড় ধরনের অগ্রগতি এসেছে। দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে প্রতিরক্ষা ও সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের জন্য ভারতের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিরল খনিজ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং।
ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ইস্যুতে আলোচনা হয়। এ সময় ভারতের মূল তিনটি উদ্বেগ—সারের জোগান, বিরল চৌম্বক খনিজ এবং টানেল বোরিং মেশিন সরবরাহ বজায় রাখার আশ্বাস দিয়েছে চীন।
বিরল মৃত্তিকা খনিজ বা রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস হলো ১৭ ধরনের উপাদান, যা আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা শিল্পে অপরিহার্য। মোবাইল ফোন, কম্পিউটার চিপ, বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি, উইন্ড টারবাইন, স্যাটেলাইট, রাডার ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে এর ব্যবহার অপরিসীম। এ কারণে এসব খনিজকে ‘২১ শতকের তেল’ বলা হয়ে থাকে।
বিশ্বের মোট উৎপাদনের প্রায় ৬০–৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে চীন। শুধু খনিজ উত্তোলন নয়, প্রক্রিয়াকরণ ও সরবরাহ ব্যবস্থাতেও তাদের একাধিপত্য রয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, জাপান থেকে শুরু করে ভারত—এসব শিল্পোন্নত দেশ কোনো না কোনোভাবে চীনের ওপর নির্ভরশীল।
সম্প্রতি চীনের আকস্মিক সার রপ্তানি-নিষেধাজ্ঞা ভারতের রবি মৌসুমে ডি-অ্যামোনিয়াম ফসফেটের জোগানে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছিল। একইভাবে টানেল বোরিং মেশিনের চালান আটকে যাওয়ায় বেশ কিছু অবকাঠামো প্রকল্প স্থবির হয়ে পড়ে। অন্যদিকে অটো ও ইলেকট্রনিক শিল্প খাত চীনের বিরল চৌম্বক খনিজ রপ্তানি বন্ধ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, সীমান্তে সেনা প্রত্যাহার ও কূটনৈতিক আলোচনার ধারাবাহিকতায় এবার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করায় দুই দেশের মধ্যে আস্থার নতুন মাত্রা তৈরি হলো।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে