ব্রহ্মপুত্রে চীনা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ শুরু
ব্রহ্মপুত্র নদীতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। তিব্বত ও ভারত দিয়ে প্রবাহিত নদীটি অবশ্য চীনে পরিচিত ইয়ারলুং জাংবো নামে।
পাঁচটি ক্যাসকেড (ভাটিতে একের পর এক) জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এ প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ১ লাখ ২ হাজার কোটি ইউয়ান বা প্রায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ডলার। নির্মাণ শেষ হলে চীনের বৃহত্তম বাঁধটি কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ইয়াংসি নদীতে নির্মিত ‘থ্রি গর্জেস বাঁধকেও’ ছাড়িয়ে যেতে এবং ভারত ও বাংলাদেশে নদীর তলদেশে থাকা কোটি কোটি মানুষের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি নির্মাণ ও পরিচালনায় সম্প্রতি বেইজিংয়ে চায়না ইয়াজিয়াং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের উদ্বোধন হয়েছে।
সিনহুয়া জানায়, শনিবার (১৯ জুলাই) দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সিজাং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের নিংচি শহরে মেইনলিং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধের নিচে প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) সেন্ট্রাল কমিটির পলিটিক্যাল ব্যুরোর স্থায়ী কমিটির সদস্য লি। সিপিসি সেন্ট্রাল কমিটির পলিটিক্যাল ব্যুরোর সদস্য এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ঝাং গুওকিংও ছিলেন তার সঙ্গে। আরও ছিলেন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজে গঠিত বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা কমিটির সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিনিধিরা
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে তিব্বত ও সিজাংয়ের স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অন্য প্রদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্ম কমিশন এবং পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন অব চায়নাসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
এএফপি জানায়, গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় বেইজিং। প্রকল্পটিকে দেশের কার্বন নিরপেক্ষতা লক্ষ্যমাত্রা এবং তিব্বত অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
ভারত জানিয়েছে, তারা জানুয়ারিতে চীনকে এই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। বলেছে, স্বার্থরক্ষায় নজরদারি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সে সময় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘চীনকে উপনদী অঞ্চলেন কার্যক্রমে ব্রহ্মপুত্র নদীর তলদেশে থাকা রাজ্যগুলোর স্বার্থ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে’।
তবে, প্রকল্প অনুমোদনকালেই চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করে, এই প্রকল্প নদীর তলদেশে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। নিম্নপ্রবাহের দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখারও প্রতিশ্রুতি দেয় দেশটি।
তবে পরিবেশবিদরা বলছেন, তিব্বতের পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল মালভূমিতে এ ধরনের বিশাল প্রকল্প অপরিবর্তনীয় প্রভাব ফেলতে পারে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে