লেখালেখি
ধামরাইয়ের রথযাত্রা ও আষাঢ়ের প্রকৃতি
আষাঢ় মানেই কদম ফুল, আষাঢ় মানেই বৃষ্টি, রথযাত্রার উৎসব। বাংলাদেশে এ এক চমৎকার প্রকৃতি ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন। তেরই আষাঢ় সকালে এক পশলা বৃষ্টি নামল। ছিটেফোঁটা সে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে বেরিয়ে পড়লাম ধানমন্ডি থেকে ধামরাই। আকাশটাও মেঘলা হয়ে রইল। ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি রথের দিন বৃষ্টি নামে রথের রশির টানে টানে। এক এক জায়গায় তো রথের রশি টানা হয় এক এক সময়। তার মানে কি সেসব জায়গায় স্থানীয়ভাবে বৃষ্টি ঝরে? তা হয়তো না; কিন্তু আষাঢ়ে বৃষ্টির স্বভাবটাই এমন। একটানা অনেকক্ষণ ধরে বৃষ্টি থাকে না। এই আসে এই যায়।
কহলীল জিবরান ও হৃদয়ের আধিপত্য
কহলীল জিবরান যা লিখেছেন তাকে কীভাবে ব্যাখ্যা করা যায়; জিবরানের একেকটি গ্রন্থ পাঠ শেষে এমন প্রশ্ন বড় করে সামনে আসে। এর প্রধান কারণ, স্থান-কাল-পাত্রের সংযোগ এবং ঐক্যকে তিনি তার রচনা থেকে বাতিল করেছেন।
পিট সিগার: যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদী চরিত্র
বিশ শতকে পৃথিবীব্যাপী এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার হয়েছিলেন আমেরিকান কিংবদন্তিতুল্য শিল্পী পিট সিগার। লোকসংগীতের প্রচণ্ড অনুরাগী এক গায়ক ছিলেন পিট।
অশ্রুতে লেখা রবে যাদের নাম
বছর ঘুরে গেল। দেখতে দেখতে চলে গেল ২০২৪ সাল। পৃথিবী আরেকবার পাক খেয়ে এলো সূর্যের চারপাশ। কত কথা, কত গল্প জমা হলো এই এক বছরজুড়ে। নতুন বছরে শুরু হবে নতুন গল্প। সেই গল্পে যুক্ত হবে না কিছু নাম। গত বছরে অনেক প্রিয় মানুষকে হারিয়েছি আমরা। কেউ হারিয়েছেন পরিবারের মানুষ, কেউ আত্মীয়স্বজন। পরিবার-পরিজন না হলেও এমন কিছু মানুষ আছেন যারা হৃদয়ের বন্ধনে যুক্ত হন পরম বন্ধুর মতো, আত্মীয়স্বজনের মতোই। বছর শেষে তাদের নাম তালিকাভুক্ত হয় সালতামামির খাতায়। তাদের প্রতি শ্রদ্ধার্থে পত্রিকাগুলো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে- ‘এ বছর যাদের হারালাম’ শিরোনামে। যেন কিছু নাম, কিছু সংখ্যা, কিছু ব্যক্তিবিশেষ। কিন্তু আমাদের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে তাদের অবদান এতই উজ্জ্বল যে, কেবল জীবনবৃত্তান্তের হিসেবে তাদের ধারণ করা যায় না। চোখের আড়ালে চলে গেলেও বারবার তাদের নাম লেখা হতে থাকে চোখের পানিতে।
মাদকের কবলে হলিউড: গ্ল্যামারের আড়ালে তিক্ত সত্য
খ্যাতির লোভ অনেক সময় অন্ধকার জগতে ঠেলে দেয় সেলিব্রেটিদের। হলিউডের চকচকে গ্ল্যামারের মোহে পড়ে মিডিয়ার সজাগ দৃষ্টি, পাবলিক ইমেজ ও বিনোদন জগতের উচ্ছ্বাস টিকিয়ে রাখতে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন অনেকেই।
বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ ছোট হলেও অগুরুত্বপূর্ণ নয়
চলতি বছরের একটি ঘটনা দিয়ে শুরু করা যাক। গেল এপ্রিলে খবরটি বেশ চাউর হয়েছে। কমবেশি সবারই চোখে পড়েছে তা। সেটি হচ্ছে- ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকা কাকার সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ জানিয়েছেন তার সাবেক স্ত্রী ক্যারোলিন। কারণ হিসেবে ক্যারোলিন উল্লেখ করেছিলেন- কাকা মানুষ হিসেবে এতটাই পারফেক্ট (নিখুঁত) যে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বিচ্ছেদের। এমন মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই অনেকেই নড়েচড়ে বসেছেন। কেউবা হয়তো ক্ষণিকের জন্য ভেবেছিলেন- ভুল পড়ছি না তো! সত্যিই তো, কেউ যদি পুরোপুরি নিখুঁতই হয়, তাহলে বিচ্ছেদইবা হবে কেন! এ তারকার বিচ্ছেদের বহু বছর পর এমন মন্তব্য করেছেন ক্যারোলিন যখন সাবেক এ দম্পতির দুজনই নতুন আরেকটি সম্পর্কে রয়েছেন।
সংস্কৃতি খাতে প্রস্তাবিত বাজেট বাড়লেও হতাশাজনক
গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকার বাতিঘর বইয়ের দোকানে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল কয়েকজন লেখক-চিন্তকের সঙ্গে। বিদেশ-ফেরত এক অধ্যাপক ও লেখক বলছিলেন, বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি-চিন্তার ক্ষেত্র উন্নতি করতে হলে প্রচুর সংখ্যক বিদেশি বই বাংলায় অনুবাদ করতে হবে। শুধু সাহিত্য নয়, বিজ্ঞান, অর্থনীতি, গবেষণা, প্রযুক্তি সব বিষয়ের বই-ই প্রচুর অনুবাদ প্রয়োজন। তখন আরেক লেখক সরস মন্তব্য করেন, অনুবাদের জন্যই বাজেটে ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকা উচিত। আরেক লেখক ভ্রুকুটি করে বলেন, ১ হাজার কোটি এখন কোনো টাকা!
সিনেমা: মুসলিম দেশগুলোতে
সিনেমা। এই শব্দটির ব্যাপকতা, প্রভাব ইদানীং অনেক বেশি। জনরুচির প্রাধান্য দিতে কিংবা জনরুচিকে প্রভাবিত করতে পারে এই মিডিয়াম। তাই সাধারণ মানুষের রুচি বা অভিরুচি মাথায় রেখেই বেশিরভাগ সিনেমা তৈরি হয় দেশে দেশে, বিশ্বে। কিছু সিনেমা আবার নির্মাতা নিজের ভালোলাগা, দর্শন, দায়িত্ব এবং দায়িত্ববদ্ধতার নিরিখে নির্মাণ করেন। তবে এসব সিনেমা ব্যাপকভাবে দর্শকদের কাছে পৌঁছায় না। একটা নির্দিষ্টসংখ্যক দর্শকের কাছে অজানাই থাকে। তবে বিভিন্ন দেশের বিভিন্নরকম সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকে। থাকে ভ্যালুজ, ইডিওলজি, ট্যাবু এবং ধর্মীয় ইথিকসের বেড়াজাল, যা সিনেমার ভেতর স্বাধীনতাকে সংকুচিত করে দেয়। আমরা এটাও জানি, রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম হয় না, হয় ব্যক্তির।
প্রিয় মানুষ: একজন এ বি এম হেলালের প্রতিকৃতি
মানুষমাত্রই তার অস্তিত্বকে প্রকাশ করে অন্যের আয়নায়। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, সহচারী, সহকর্মীদের চোখেই প্রধানত একজন মানুষের সারাজীবনের প্রতিকৃতি প্রতিবিম্বিত হয় সবচেয়ে স্পষ্টভাবে। আর সে মানুষটি যদি একজন লেখক, গবেষক, ভ্রমণপিপাসু ও প্রকাশক হোন- স্বাভাবিকভাবেই তার আত্মপ্রকাশের পরিধি অনেক বেশি বিস্তৃত হয়। সঙ্গী, সহচারী হিসেবেও তিনি কাছে পান সেইসব বন্ধুবৎসল মানুষদের, যারা তার কর্ম, কৃতিকে শত পুষ্পের তোড়া বানিয়ে উপস্থাপন করতে পারেন।
২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব: সবচেয়ে সফল উৎসবগুলোর একটি
আমার তারুণ্যে যে একটা চলচ্চিত্র উৎসব সম্পর্কে জানতাম, তা হলো ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের কথা। এখনো স্মৃতিতে ঝলঝল করে ছবি দেখার জন্য পাবলিক লাইব্রেরির খোলা চত্বরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। নতুন বিল্ডিং তুলবে বলে পাবলিক লাইব্রেরির পুরোনো বিল্ডিংটা ভেঙে ফেলা হয়েছে। উৎসবের মূল ভেন্যু এখন জাতীয় জাদুঘর। নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেদ করে ঢুকতে হয় বলে সেখানে আর তেমন ভিড় হয় না। চলচ্চিত্র প্রেমিকরা স্বতন্ত্র প্রজাতির মানুষ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা ছবি দেখবে, মাঝে মঝে গালগল্প করবে এই তাদের স্বভাব।