হারিকেন মেলিসার তাণ্ডবে বিপর্যস্ত ক্যারিবীয় অঞ্চল, নিহত ৩০

প্রবল শক্তিশালী হারিকেন মেলিসা ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জজুড়ে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে, ধসে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, হাসপাতাল ও সড়ক। বহু এলাকা এখনো বিদ্যুৎবিহীন ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে বয়ে যাওয়া ক্যাটাগরি–৫ মাত্রার এই ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জ্যামাইকা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস বলেছেন, ‘পুরো দেশটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে।’

ঝড়ে হাসপাতাল, পুলিশ স্টেশন ও সরকারি স্থাপনাও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে। মন্টেগো বে শহরের মেয়র জানান, শহরের অর্ধেকটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। হাজারো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন।

হাইতিতে ভয়াবহ বন্যায় আরও অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ১০ জন শিশু। তিন হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন। খ্রিস্টান সংগঠন ওয়ার্ল্ড রিলিফ-এর এক কর্মকর্তা জানান, অনেক বাড়ি উপকূলে ভেসে গেছে, অনেকে খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছেন।

কিউবার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলেও ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে মেলিসা। প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াস–কানেল জানান, দেশটি আগাম প্রস্তুতি নেওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কম হয়েছে।

ঝড়টি বর্তমানে বাহামাসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে। এরপর এটি বারমুডা হয়ে শুক্রবার রাতে কানাডার সেন্ট জনস শহরের উপকূলে গিয়ে এক্সট্রা-ট্রপিকাল সাইক্লোনে রূপ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র জ্যামাইকায় সহায়তা পাঠিয়েছে। হাইতি ও বাহামাসও আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক সাহায্য চেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, একটি দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া দল জ্যামাইকার ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়নে কাজ করবে।