মিয়ানমারের এক উৎসবে বোমা হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত
মিয়ানমারের চাউং উ টাউনশিপে একটি বৌদ্ধ উৎসবে জড়ো হওয়া জনতার ওপর মোটরচালিত এক প্যারাগ্লাইডার থেকে দুটি বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে অন্তত ২৪ জন নিহত এবং আরও ৪৭ জন আহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নির্বাসিত সরকারের এক মুখপাত্রের বরাতে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় প্রায় ১০০ জন মানুষ সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ওই উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন, তখনই এই হামলা ঘটে।
২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী ও জাতিগত মিলিশিয়ার সঙ্গে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। এ সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সম্প্রতি দেশের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর সেনাবাহিনী বিমান হামলা ও ভারী গোলাবর্ষণের মাধ্যমে কিছু এলাকায় পুনরায় দখল প্রতিষ্ঠা করেছে।
চাউং উ সাগাইং অঞ্চলে অবস্থিত, যা প্রতিরোধযুদ্ধের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। যেখানে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী মিলিশিয়া ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (PDF) স্থানীয় প্রশাসন পরিচালনা করে। এক পিডিএফ কর্মকর্তা জানান, তারা সম্ভাব্য আকাশপথে হামলার বিষয়ে আগেই সতর্কতা পেয়েছিলেন, কিন্তু মোটরচালিত প্যারামোটরগুলোর হামলা ঠেকাতে পারেননি। ‘সবকিছু মাত্র সাত মিনিটের মধ্যেই ঘটে গেল,’ তিনি বলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ভয়াবহ পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন। এক স্থানীয় আয়োজক এএফপিকে বলেন, অনেক লাশ চেনা যাচ্ছিল না, নিহতদের মধ্যে শিশুদেরও পাওয়া গেছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং জানিয়েছে যে মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার ব্যবহার সেনা জান্তার এক :উদ্বেগজনক নতুন প্রবণতার’ অংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রচলিত বিমান সংগ্রহে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও চীন ও রাশিয়া থেকে প্রাপ্ত নতুন ড্রোন এবং প্রযুক্তি তাদের সক্ষমতা বাড়িয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মিয়ানমার গবেষক জো ফ্রিম্যান এই ঘটনাকে ‘ভয়াবহ সতর্কবার্তা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে আসিয়ানকে জান্তার ওপর আরও চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
এই অনুষ্ঠানটি ছিল সামরিক বাধ্যতামূলক নিয়োগ, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, এবং সাবেক নেত্রী অং সান সুচি-সহ রাজনৈতিক বন্দিদের আটকের প্রতিবাদে আয়োজিত এক শান্তিপূর্ণ সমাবেশ। সমালোচকরা বলছেন, ডিসেম্বরের নির্ধারিত নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা নেই, বরং তা সামরিক সরকারের ক্ষমতাকে আরও অপ্রতিরোধ্য করে তুলবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে