আসামে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ, আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড
আসামে বহুবিবাহ প্রতিরোধে নতুন আইন পাস করেছে রাজ্য বিধানসভা। বৃহস্পতিবার ‘আসাম প্রোহিবিশন অফ পলিগ্যামি বিল, ২০২৫’ পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে রাজ্যে বহুবিবাহকে দণ্ডনীয় অপরাধ ঘোষণা করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের বিধান রাখা হয়েছে।
তবে তপশিলি জনজাতি (এসটি) ও সংবিধানের ষষ্ঠ তপশিলভুক্ত অঞ্চল- বডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল রিজিয়ন, ডিমা হসাও, করবি আংলং এবং পশ্চিম করবি আংলং- এই আইনের আওতার বাইরে থাকবে।
বিল পাস হওয়ার পর আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, রাজ্যের নারীদের সামাজিক ও পারিবারিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘ঐতিহাসিক’ এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিধানসভায় বিলটি উপস্থাপনের পর তুমুল বিতর্ক হয়। কয়েকজন মুসলিম বিধায়ক অভিযোগ করেন, এই আইন সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুণ্ন করবে। তাদের যুক্তি—মুসলিম পার্সোনাল ল’ রাজ্য আইনের ঊর্ধ্বে, ফলে আইনি জটিলতা তৈরি হবে।
জবাবে মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি দলের মন্ত্রী–বিধায়কেরা বলেন, মুসলিম পার্সোনাল ল’ যদি রাজ্যের আইন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে আসামে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউনিফর্ম সিভিল কোড) প্রবর্তন করা হবে।
বিল অনুযায়ী, ইতোমধ্যে বিবাহিত কেউ পুনরায় বিয়ে করলে সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড হতে পারে। আর দ্বিতীয় বিয়ে গোপন করার চেষ্টা করলে শাস্তি ১০ বছর পর্যন্ত হতে পারে। বহুবিবাহে সহযোগিতা বা উৎসাহ দিলে- যেমন কাজী, পুরোহিত, গ্রামপ্রধান, অভিভাবক বা আইনজীবী—তারাও আইনের আওতায় আসবেন।
বিল পাসের পর মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ মুসলিম নারীদের জন্য ‘অভিশাপস্বরূপ’; এই আইন তাদের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় সহায়ক হবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে