বুদ্ধিজীবীদের মুখোশ উন্মোচন করেছিলেন আহমদ ছফা
‘বাঙালি মুসলমান সমাজ স্বাধীন চিন্তাকেই সবচেয়ে ভয় করে’ মন্তব্যটি লেখক আহমদ ছফার। মন্তব্যটি করেছিলেন তার লেখা ‘বাঙালি মুসলমানের মন’ প্রবন্ধে। প্রবন্ধটির পটভূমি ব্যাখ্যা করে তারই শিষ্য লেখক-অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেছিলেন, ‘বাঙালি মুসলমান আসলে কোনো জাতিগোষ্ঠী নয়। এটি একটি বিশেষ শ্রেণির নাম, যারা মুসলমান ও বাংলায় কথা বলেন এবং এ নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন। বাঙালি ও মুসলিম জনগোষ্ঠীর শোষিত শ্রেণির একটি বিশেষ অংশ, যাদের হীনম্মন্যতার অবসান হয়নি, তারাই এই বাঙালি মুসলমান। সময় বদলালেও এই হীনম্মন্যতার সংকটের অবসান হয়নি। এর কারণেই সব স্তরে বাংলা ভাষার দুরবস্থা এখনও কাটেনি।’
সাহিত্য সমালোচকদের অনেকে ছফার বাঙালি মুসলমানের মন প্রবন্ধ সংকলনটিকে বাংলা ভাষায় রচিত গত শতাব্দীর সেরা দশ চিন্তার বইয়ের একটি বলে মনে করেন। শুধু তাই নয়, আহমদ ছফা তার ‘সাম্প্রতিক বিবেচনা: বুদ্ধিবৃত্তির নতুন বিন্যাস’ বইয়ে লিখেছেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা যা বলতেন, শুনলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। এখন যা বলছেন, শুনলে বাংলাদেশের সমাজ কাঠামোর আমূল পরিবর্তন হবে না। আগে বুদ্ধিজীবীরা পাকিস্তানি ছিলেন, বিশ্বাসের কারণে নয়- প্রয়োজনে। এখন অধিকাংশ বাঙালি হয়েছেন- সেও ঠেলায় পড়ে।’
একই প্রবন্ধে তিনি আরও লিখেছেন, ‘বর্তমান মুহূর্তে আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠিত বুদ্ধিজীবীরাই হচ্ছেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শ্রেণি। এরা চিরদিন হুকুম তামিল করতেই অভ্যস্ত। প্রবৃত্তিগত কারণে তারা ফ্যাসিস্ট সরকারকেই কামনা করে। কেননা একমাত্র ফ্যাসিস্ট সরকারই কিছুসংখ্যক বুদ্ধিজীবী সম্মান শিরোপা দিয়ে পুষে থাকে। অল্পসংখ্যক বাছাই করা লোককে দিয়ে নিজেদের প্রচার প্রোপাগান্ডা করিয়ে দেশের জনসমাজের স্বাধীন চিন্তা এবং প্রাণস্পন্দন রুদ্ধ করেই ফ্যাসিবাদ সমাজে শক্ত হয়ে বসে। চিন্তাশূন্যতা এবং কল্পনাশূন্য আস্ফালনই হল ফ্যাসিবাদের চারিত্র্য লক্ষণ।’ আহমদ ছফা আরেকটি লেখায় লেখেন, ‘রাষ্ট্র যা শিক্ষা দেয় তাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ মিথ্যার মিশাল থাকেই; এই মিথ্যা মারাত্মক, মানুষের মনোবৃত্তিকে বিষিয়ে তোলার ক্ষমতা এর অপরিসীম।’
বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছরের মাথায় ছফা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘বর্তমানে যেসব পণ্ডিত, লেখক, অধ্যাপক এবং রাজনৈতিক নেতা বাংলা ভাষা চালুর পক্ষে কলম ধরেন, সভা-সমিতিতে বিবৃতি পাঠ করেন, মুখে মুখে বাংলা ভাষাপ্রেমী বলে জাহির করেন, তাদের কাছে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনারা কোন ভাষাটি চালুর কথা বলছেন? কলকাতার যেই বাংলা ভাষাটি চালু আছে সেটি নয়তো?’ তার আরও জিজ্ঞাসা: ‘যদি বলেন, কলকাতার বাংলা ভাষাটি যদি ভাঙচুর না করা হয় তাহলে বাংলাদেশের মানুষের উপযোগী বাংলা ভাষা তো তৈরি হতে পারবে না। এই সম্পর্কে আপনার কি মত?’ এই ব্যাপারে ছফার শঙ্কা, ‘সম্ভবত তারা কোনও সদুত্তর দিতে পারবেন না।’
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অসুখ কত গভীরে ছফা সেটি গভীরভাবে অনুধাবন করতে পেরেছিলে। ১৯৯৯ সালে কলকাতা কলকাতা বইমেলায় কলকাতার স্বাধীন বাংলা সাময়িকীর পক্ষে আহমদ ছফার একটি সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করা হয়। সাক্ষাৎকারটি বাংলাদেশের বাংলাবাজার পত্রিকা সেখান থেকে নিয়ে তিন কিস্তিতে (১৮ মাঘ ১৪০৫/ ৩১ জানুয়ারি ১৯৯৯, ১৯ মাঘ ১৪০৫/১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯, ২০ মাঘ ১৪০৫/২ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯) আবার ছাপে। উপরের প্রশ্নোত্তরটি সাক্ষাৎকারের ৪৯টি প্রশ্নোত্তরের একটি। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের ক্ষমতার রাজনীতিটা একটা দুষ্ট চক্রের মিউজিক্যাল চেয়ারে পরিণত হয়েছে।’
সাক্ষাৎকারের একটি প্রশ্ন ছিল: যে লক্ষ্য এবং স্বপ্নকে সামনে রেখে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা প্রাপ্তির ২৬ বছর পর সেই স্বপ্ন কতটা সফল। কিংবা স্বাধীনতা প্রাপ্তির ছাব্বিশ বছরের এই পর্বটিকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? জবাবে আহমদ ছফা বলেছিলেন, ‘প্রথম স্বপ্নটা তো বাস্তবায়িত হয়েছে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত বাংলার রাজনীতিকে যারা পরিচালনা করতেন তারা ছিলেন উচ্চ বর্গীয় অভিজাত। এখন সন অব দ্য সয়েলরা রাজনীতিতে আসছেন। অন্যদিকে আশঙ্কার দিকটি হলো এখানে রাতারাতি একটি ইকোনমিক ক্লাস গ্রো করেছে। এই ইকোনমিক ক্লাসটি গড়ে উঠেছে ইকোনমিক প্লানডার (plunder) এবং লুণ্ঠন থেকে। লুণ্ঠনটা হয়েছে ব্যাপকহারে। এমন কয়েকজনকে আমি জানি, মুক্তিযুদ্ধের সময় যাদের ২৫শ টাকা ছিল না, এখন তাদের ক্যাপিটাল ২৫শ কোটি টাকা। রাজনৈতিক ক্ষমতাকে প্রয়োগ করে তারা এই টাকা আয় করেছে।
এর ফলে যে সমস্যার মধ্যে আমরা পড়েছি যদি পশ্চিম বাংলার সঙ্গে বিষয়টি তুলনা করি বুঝতে সুবিধা হবে। পশ্চিম বাংলার মতো (১৯৯৬) বিধানসভা নির্বাচনের আগে (১৯৯১) বর্ধমানে কালু ডোম বলে এক ব্যক্তি কংগ্রেসের এক সর্বভারতীয় ব্যক্তিকে পরাজিত করেছিলেন। এ চিত্র আপনি এখানে পাবেন না। কারণ আওয়ামী লীগ বলুন, বিএনপি বলুন, জাতীয় পার্টি বলুন, জামায়াতের কথা একটু স্বতন্ত্র, সব দল চলছে বাংলাদেশের নব্য ধনীদের অবৈধ উপায়ে আয় করা টাকার ওপর।
কাজেই পশ্চিম বাংলার কালু ডোমদের মতো কোনো প্রতিনিধি বাংলাদেশের সংসদে যেতে পারবেন না। এখানকার পত্রপত্রিকায় ঋণখেলাপি বলে একটা ব্যাপার দেখে থাকবেন। ব্যাংকগুলো থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে, ঋণ শোধ করা হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না, কারণ এদের পক্ষে আছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। বাংলাদেশের সব বুর্জোয়া দল চলে এদের চাঁদায়। এর ফলে বাংলাদেশে যে সংসদীয় ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে সেই সংসদে জনগণের সত্যিকার চিন্তা-ভাবনা, আশা-আকাঙ্ক্ষা কোন প্রতিফলন ঘটছে না। আপনি ঢাকায় এসে দেখলেন বিএনপির দুজন এমপি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী হলেন। ক্ষমতায় থাকার সময় বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি এইভাবে অন্য দলের এমপি ভাগিয়ে এনে মন্ত্রী বানিয়েছেন। এইভাবে বাংলাদেশের ক্ষমতার রাজনীতিটা একটা দুষ্ট চক্রের মিউজিক্যাল চেয়ারে পরিণত হয়েছে।’
সমাজ রাষ্ট্র ও চিন্তার গভীরে গিয়ে এমন বাস্তব এমন সত্য উচ্চারণ যে আহমদ ছফার দ্বারাই সম্ভব, তিনি প্রমাণ করেছিলেন। ছফা ছিলেন একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, সংগঠক ও গণবুদ্ধিজীবী। জীবদ্দশায় অনেকে তাকে বিদ্রোহী, বোহেমিয়ান, প্রচলিত ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধাহীন ও বিতর্কপ্রবণ বলে অভিহিত করেছেন। প্রতিষ্ঠানবিরোধী মনোভাবাপন্ন আহমদ ছফা ১৯৭৫ সালে লেখক শিবির পুরস্কার ও ১৯৯৩ সালে বাংলা একাডেমির সাদত আলী আখন্দ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। আরও শোনা যায়, তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ডাকেও সাড়া না দিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। যদিও ২০০২ সালে তাঁকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।
তার সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে, মীর মশাররফ হোসেন ও কাজী নজরুল ইসলামের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঙালি মুসলিম লেখক আহমদ ছফা। তার লেখায় বাংলাদেশি জাতিসত্তার পরিচয় নির্ধারণ সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। এক কথায়, বাংলা ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রাবন্ধিক ও ঔপন্যাসিক বলে বিবেচিত তিনি। হুমায়ূন আহমদ আহমদ ছফাকে ‘অসম্ভব শক্তিধর একজন লেখক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং তাকে নিজের মেন্টর বলে উল্লেখ করেছেন। হুমায়ূন আহমেদ তার সম্পর্কে লিখেছিলেন, ‘আমি আমার যৌবনে হন্টন পীরের মতো একজনকে পেয়েছিলাম। আমরা দল বেঁধে তার পেছনে হাঁটতাম। তিনি যদি কিছু বলতেন মুগ্ধ হয়ে শুনতাম। গভীর রাতে নীলক্ষেত এলাকায় তিনি হাঁটতে হাঁটতে আবেগে অধীর হয়ে দুই হাত তুলে চিৎকার করতেন ‘আমার বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ।’ আমরা গভীর মুগ্ধতায় তার আবেগ এবং উচ্ছ্বাস দেখতাম। তার নাম আহমদ ছফা। আমাদের সবার ছফা ভাই।’
মুহম্মদ জাফর ইকবালের মতে, আহমদ ছফা ‘চুলের ডগা থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত’ একশ ভাগ খাঁটি সাহিত্যিক। ব্যক্তিগত জীবনে আহমদ ছফা অবিবাহিত ছিলেন। তবে কয়েকজন নারীর সাথে তার প্রণয়সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য হলেন শামীম শিকদার ও সুরাইয়া খানম। এদের সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে ছফা অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী (১৯৯৬) আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস রচনা করেছিলেন। হয়ত এ কারণেই ছফা লিখেছিলেন, ‘ঘর করলাম নারে আমি সংসার করলাম না রে।’
আহমদ ছফার জন্ম ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের গাছবাড়িয়া গ্রামে। তার পিতা হেদায়েত আলী এবং মাতা আসিয়া খাতুন। ছাত্রাবস্থায় সুধাংশু বিমল দত্তের মাধ্যমে কৃষক সমিতি-ন্যাপ বা তৎকালীন গোপন কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত হন। কলেজ জীবনে মাস্টারদা সূর্যসেনের বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁরা কয়েকজন বন্ধু মিলে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইন উপড়ে ফেলেন। পরে গ্রেপ্তার এড়াতে কিছুকাল পার্বত্য চট্টগ্রামে আত্মগোপন করেন।
১৯৭১ সালে ‘লেখক সংগ্রাম শিবির’ গঠন ও এর বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় অংশ নেন। ৭ মার্চ ‘স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা’ হিসেবে প্রতিরোধ প্রকাশ করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এপ্রিল মাসে কলকাতা চলে যান। মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে সেখান থেকে দাবানল নামের পত্রিকা সম্পাদনা করেন। দেশ স্বাধীন হবার পর বাংলাদেশে ফিরে লেখালেখি করতে থাকেন। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক নাজিমুদ্দিন মোস্তানের সহায়তায় কাঁটাবন বস্তিতে ‘শিল্পী সুলতান কর্ম ও শিক্ষাকেন্দ্র’ চালু করেন। পরে ১৯৮৬-তে জার্মান ভাষার ওপর গ্যেটে ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা ডিগ্রিও লাভ করেন তিনি, যা তাঁকে পরবর্তী সময়ে গ্যেটের অমর সাহিত্যকর্ম ফাউস্ট অনুবাদে সহায়তা করেছিল। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম গ্রন্থ হিসেবে মুক্তধারা থেকে প্রকাশ পায় ছফার প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘জাগ্রত বাংলাদেশ।’
ছফার আরেকটি বিখ্যাত গ্রন্থ ‘গাভী বৃত্তান্ত’ ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসের মূল কেন্দ্র একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বা লোক বিশ্ববিদ্যালয়, উপন্যাসের ভাষায়, ‘দেশের সবচাইতে প্রাচীন এবং সম্ভ্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং মূল চরিত্র সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত উপাচার্য মিঞা মোহাম্মদ আবু জুনায়েদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদে আবু জুনায়েদের আরোহণ এবং এর আগে ও পরে শিক্ষক রাজনীতিকে ঘিরে ঘটনাচক্র উপন্যাসটির বিষয়বস্তু। পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গপুরাণ (১৯৯৬) একটি আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস লেখকের। জাপানি ভাষায় পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গপুরাণ উপন্যাসের অনুবাদ প্রকাশ পায় ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে। পুষ্প, বৃক্ষ, বিহঙ্গ ঘুরে সুশীল সমাজের ব্যবচ্ছেদ হয়েছে তার এই উপন্যাসে।
আমরা অনেক সময় হাতের কাছে বড় লেখক দেখলে চিনতে পারি না। আহমদ ছফা ছিলেন তেমনি একজন মহান লেখক। প্রাজ্ঞ, ঋষিসূলভ ও মহাপুরুষসূলভ উপলব্ধি এসেছিল তার মধ্যে। আহমদ ছফা সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখায় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন দীপ্তিময়ভাবে। গল্প, গান, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, অনুবাদ, ইতিহাস, ভ্রমণকাহিনি মিলিয়ে তিরিশটির বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার জীবদ্দশায় আহমদ ছফা রচনাবলি প্রকাশ শুরু হয়। তার রচনাবলি ৯ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। তার রচিত আরেকটি জনপ্রিয় বই হলো অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাককে নিয়ে লেখা ‘যদ্যপি আমার গুরু।’
২০০১ সালে ২৮ জুলাই অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয় বরেণ্য এ লেখকের। অবাক করার ব্যাপার হলো, পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে জানাজা শেষে মিরপুরের বুদ্ধিজীবী গোরস্তানের পাশে বিশ হাজার টাকা চাঁদা তুলে জায়গায় কিনে তাকে দাফন করা হয়। বরেণ্য এ ব্যক্তির প্রয়াণবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
শাহাদাত হোসেন তৌহিদ: সাংবাদিক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে