সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার ক্ষমতা পাচ্ছে ট্রাইব্যুনাল
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে সংশোধনী আনতে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (তৃতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদ তাদের ৪১তম সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।
আইনি মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের যাচাইবাছাই সাপেক্ষে এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (তৃতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ধারা ১১-এর উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল কোনো অভিযুক্তের সম্পত্তি জব্দ বা বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিতে পারবে, যাতে অভিযুক্তের পলায়ন রোধ করা যায়।
ধারা ২০ (ক)-এর অধীনে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এখন থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে। পূর্বের ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল)’ আইনে এই বিধান ছিল না।
ধারা (এফ)-এর সংশোধনীতে বলা হয়েছে, যারা কার্যকরভাবে কোনো রাষ্ট্রের রাজনৈতিক বা সামরিক পদক্ষেপের ওপর নিয়ন্ত্রণ বা নির্দেশ দেয়ার অবস্থানে আছেন, তাদের আগ্রাসনকে শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে।
ধারা ১৯-এর নতুন উপ-ধারা (৫) যোগ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘এই ধারায় যা কিছু থাকুক না কেন, ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য গ্রহণে কারিগরি নিয়ম দ্বারা আবদ্ধ থাকবে না এবং দ্রুত সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য অ-কারিগরি পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারবে।’
অধ্যাদেশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে নতুন ধারা ২০ সি সংযোজিত হয়েছে। নতুন ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল হলে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা বহাল থাকার অযোগ্য হবেন। একইভাবে তিনি স্থানীয় সরকার পরিষদ বা প্রতিষ্ঠানের সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা বহাল থাকার যোগ্য হবেন না। এছাড়াও তিনি প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বা চাকরি পাওয়ারও অযোগ্য হবেন।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) (তৃতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এ আনা সংশোধনী ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অত্যন্ত জরুরি। এতে আসামির সম্পদ বাজেয়াপ্ত, ক্ষতিপূরণ আদায়, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ ও আদালতে দ্রুত সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ট্রাইব্যুনালকে নতুন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, যা রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও গতিশীল করবে।
তিনি বলেন, সংশোধিত আইনে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল হলে অভিযুক্ত ব্যক্তি এমপি বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত হওয়া বা বহাল থাকার অযোগ্য হবেন। তিনি প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বা চাকরি পাওয়ারও অযোগ্য হবেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে