গাজায় বিস্ফোরণে সাত ইসরায়েলি সৈন্য নিহত
ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে গাজা উপত্যকায় বিস্ফোরক ডিভাইসের আঘাতে একটি পুমা সামরিক সাঁজোয়া যান বিস্ফোরণে সাতজন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়েছে। যুদ্ধ অভিযানে যাওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং যুদ্ধ গাড়িটির নিচে একজন ফিলিস্তিনি একটি বোমা পুঁতে রেখেছিলেন বলে দাবি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ)।
এ নিয়ে গাজায় স্থল অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে গত ২০ মাসে নিহত আইডিএফ সদস্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪০ জনে।
আইডিএফ জানায়, মঙ্গলবার (২৪ জুন) ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায়। বিস্ফোরণে আইডিএফের ৬০৫তম কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নের গাড়িটি আগুনে পুড়ে গেলে সৈন্যদের উদ্ধারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সাতজন সৈন্য। পরে ধ্বংসাবশেষ থেকে তাদের মরদেহ টেনে বের করা হয়। পুড়ে যাওয়া সাঁজোয়া যানটি অন্য গাড়ির সাহায্যে টেনে গাজার বাইরে ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হয়।
বুধবার (২৫ জুন) নিহত সৈন্যদের ছয়জনকে শনাক্ত করেছে আইডিএফ। তারা হলেন, কেফার ইয়োনার বাসিন্দা লেফটেন্যান্ট মাতান শাই ইয়াশিনোভস্কি (২১), রেহোভোটের স্টাফ সার্জেন্ট রোনেল বেন-মোশে (২০), এলিয়াখিনের স্টাফ সার্জেন্ট নিভ রাদিয়া (২০), মাজকেরেট বাতিয়ার সার্জেন্ট রোনেন শাপিরো (১৯), আশকেলনের সার্জেন্ট শাহার মানোভ (২১) এবং এশহারের সার্জেন্ট মায়ান বারুচ পার্লস্টেইন (২০)।
নিহত সপ্তম সৈনিকের নাম পরে প্রকাশের আশা করা হচ্ছে। সবাই ৬০৫তম কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নে কর্মরত ছিলেন।
রয়টার্স জানায়, বোমা বিস্ফোরণে একজন এবং খান ইউনিসের কাছে পৃথক সংঘর্ষে একই ব্যাটালিয়নের আরও দুই সৈন্য রকেট-চালিত গ্রেনেড (আরপিজি) গুলিতে আহত হয়েছেন। তাদের একজনের অবস্থা গুরুতর, অন্যজন হালকা আঘাত পেয়েছেন।
অন্যদিকে গাজার চিকিৎসাকর্মী ও বাসিন্দাদের বরাতে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, মঙ্গলবার ছিটমহলটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ও সেনাদের গুলিতে আরও অন্তত ৮৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে চলমান গাজা যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাাঁড়ালো ৫৬ হাজার ৭৭ জনে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত এক লাখ ৩১ হাজার ৮৪৮ জন। হতাহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট সৈনিকদের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছে, তারা ‘ইসরায়েল রাষ্ট্রকে রক্ষা এবং আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার মিশনে গিয়ে বীরত্বের সাথে লড়াই করেছেন এবং নিহত হয়েছেন’।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জোগও শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, ‘গাজার দৃশ্য কঠিন, যুদ্ধগুলো কঠিন এবং বোঝা অসহনীয়। আমরা আমাদের মাথা নত করি এবং শোকাহত পরিবারগুলোকে বেদনা ও অশ্রুতে আলিঙ্গন করি’।
নিহতদের স্মরণে দেশজুড়ে বিবৃতি জারি করেছে পৌরসভাগুলো। লেফটেন্যান্ট ইয়াশিনোভস্কির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে কেফার ইয়োনা শহর পৌরসভা বলেছে, ‘তার হাসি, তার মূল্যবোধ এবং ইসরায়েলের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা’ স্মরণ করবে তারা।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে