গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ৬৭ শিশু নিহত: ইউনিসেফ
দুই বছরের ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত মাসে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে এই যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় কমপক্ষে ৬৭ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। শনিবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের এ সংস্থার তথ্য তুলে ধরা হয়।
শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনিসেফের মুখপাত্র রিকার্ডো পিরেস জানান, নিহত শিশুদের মধ্যে একটি নবজাতক কন্যাশিশুও আছে। গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ওই নবজাতকসহ কয়েকজন নিহত হয়। এর আগের দিনও ধারাবাহিক হামলায় সাত শিশু প্রাণ হারায়।
পিরেস বলেন, 'যুদ্ধবিরতির মধ্যেই এসব ঘটনা ঘটছে। এ পরিস্থিতি ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক।'
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি শিশু ছিল একটি স্বপ্ন, একটি পরিবার—যাদের জীবন মুহূর্তেই নিভে যাচ্ছে অব্যাহত সহিংসতায়।
ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৬৪ হাজার শিশু নিহত বা আহত হয়েছে—যা এই যুদ্ধে শিশুদের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী করে তুলেছে।
এদিকে শিশু অধিকারবিষয়ক সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, ২০২৪ সালে গড়ে প্রতি মাসে ৪৭৫ ফিলিস্তিনি শিশু স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্বের শিকার হচ্ছে। অনেক শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত, আবার কারও শরীরে গুরুতর দগ্ধ ক্ষত রয়েছে। সংগঠনটির মতে, আধুনিক ইতিহাসে গাজা এখন সবচেয়ে বেশি শিশুর অঙ্গচ্ছেদের অঞ্চল।
ইউনিসেফ মুখপাত্র আরও জানান, বহু শিশু খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে এবং বন্যায় প্লাবিত অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। গাজার শিশুদের জন্য কোথাও নিরাপদ আশ্রয় নেই—এটাই বাস্তবতা। এ দুর্দশাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেওয়া মানবিকতার পরিপন্থী।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ধ্বংসস্তূপে ঘেরা শীতের রাতে তাঁবুতে থাকা লাখো শিশুর জন্য আসন্ন শীত আরও বড় হুমকি হয়ে উঠছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে