ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৬২ হাজার ৬৪ ফিলিস্তিনি, দুর্ভিক্ষে ২৬৬ জন
গত ২৪ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও অন্তত ৩৪৩ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে জোরপূর্বক চাপিয়ে দেয়া অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন আরও তিনজন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু যুদ্ধে গত ২২ মাসে প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৬৪ জনে, আহত হয়েছেন অন্তত এক লাখ ৫৬ হাজার ৫৭৩ জন। অন্যদিকে দুর্ভিক্ষপীড়িত ছিটমহলটিতে অনাহারজনিত মৃত্যু ঘটেছে ২৬৬ জনের, যাদের ১১২ জনই শিশু।
মন্ত্রণালয় বলছে, বহু মরদেহ ও আহতরা এখনো ধ্বংসস্তূপ ও রাস্তায় পড়ে আছে; কিন্তু হামলা অব্যাহত থাকায় উদ্ধারকর্মীরা অ্যাম্বুলেন্সসহ সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহতদের ৩১ জন গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণকেন্দ্রে মানবিক সহায়তা সংগ্রহে গিয়ে মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন ১৯৭ জন। এ নিয়ে গত ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত সাহায্য নেয়ার সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৯৬ জনে এবং আহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৮৯৮ জনেরও বেশি।
ফিলিস্তিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার বরাতে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, সাহায্যের জন্য অপেক্ষারত জনতার ওপর ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে উত্তর গাজা সিটির বেইত লাহিয়ার উত্তর-পশ্চিমে জিকিম করিডরের ত্রাণ কেন্দ্রে দুজন নিহত ও ৫৩ জন আহত এবং নেটজারিম করিডরের ত্রাণ কেন্দ্রে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হন।
অন্যদিকে খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুতদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আটজন, ইউনিভার্সিটি কলেজের কাছের অন্য একটি তাঁবুতে এক তরুণীসহ দুজন, খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসির মুয়াবিয়া মসজিদের বিপরীতে একটি তাঁবুতে একজন, অন্যটিতে চারজন, দেইর আল-বালাহের একটি তাঁবুতে চারজন এবং আল-বাসার একটি তাবুতে পাঁচজন নিহত হন। এসব হামলায় আহত হন কমপক্ষে ৬০ জন।
আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল জানায়, দেইর আল-বালাহর দক্ষিণ-পূর্বে কিসুফিম সাইটের কাছে ইসরায়েলি বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালালে আরও পাঁচজন নিহত হন। রাফায় দুই ফিলিস্তিনি এবং গাজা শহরের জায়তুনে কমপক্ষে চারজন নিহত হন। এসব হামলায় আহত হন আরও ৬০ জনেরও বেশি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। গাজায় এখনও প্রায় ৫০ জন বন্দী রয়েছে। তাদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে। তাদেরকে উদ্ধারের কথা বলেই ইসরায়েল সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে গাজাজুড়ে।
চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশের চাপে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও ১৮ মার্চ থেকে ফের সামরিক অভিযান চালাচ্ছে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এই অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১০ হাজার ৫১৮ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৫৩২ জন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে