Views Bangladesh Logo

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৬১৪৩০ জন ফিলিস্তিনি, চাপিয়ে দেয়া অনাহারে ২১৭ জন

ত ২৪ ঘন্টায় গাজাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ৬১ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ বিভিন্ন হাসপাতালে আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন আগের হামলায় মারা যাওয়া দুজনও। আহত আরও ৩৬৩ জনকে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে জোরপূর্বক চাপিয়ে দেয়া অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন দুই শিশুসহ আরও পাঁচজন।

হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন বা অন্য ধ্বংসস্তূপগুলোতে আরও অন্তত দশ হাজার হতাহত ফিলিস্তিনি আটকে আছেন, যেখানে পৌঁছাতে পারছেন না উদ্ধার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাদের বাদ দিয়েই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় ২২ মাসে নিহত দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৪৩০ জনে এবং আরও অন্তত এক লাখ ৫৩ হাজার ২১৩ জন আহত হয়েছেন।অন্যদিকে দুর্ভিক্ষে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৭ জনে, যার মধ্যে ১০০ জনই শিশু।

মন্ত্রণালয়ের বরাতে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, রোববার (১০ আগস্ট) স্থানীয় সময় ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহত ৩৯ জনের মধ্যে ২৩ জনই যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে খাবারের জন্য এসেছিলেন। উদ্ধার হওয়া বাকি ২২ জনের মরদেহের মধ্যে শনিবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে রাতভরের হামলায় নিহত ২০ জনের ১২ জন ত্রাণপ্রার্থী ছিলেন। ওই ২৪ ঘণ্টায় সাহায্য চাইতে গিয়ে সেনাদের গুলিতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০৪ জন।

তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, উত্তর-পশ্চিম গাজার জিকিম ক্রসিংয়ে জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রে সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ছয়জন নিহত হন। তাদের মরদেহ গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে আনা হয়েছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ত্রাণকেন্দ্রে আটজন ও অন্যটিতে আরও দুজন মারা গেছেন। মধ্য গাজার নেটজারিম করিডরের কাছের ত্রাণকেন্দ্রেও নিহত হন চারজন। অন্য ১৫ জন ত্রাণপ্রার্থী মারা যান রাফাহ শহরের কাছের ত্রাণকেন্দ্রে।

অন্যদিকে শুজাইয়ায় বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন চারজন এবং প্রায় এক ঘন্টা আগে একই এলাকায় মারা যান আরও তিনজন। বিমান ও ড্রোন থেকে ফেলা বোমায় নিহত ওই সাতজন ছিলেন বাস্তুচ্যুত ও একটি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত।

জাতিসংঘ বলছে, ২৭ মে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র চালু করে জিএইচএফ। সে সময় থেকে খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে এক হাজার ৩৯৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৮৮২ জন জিএইচএফ কেন্দ্রের কাছে এবং বাকি ৫১৪ জন নিহত হয়েছেন ত্রাণবহরের রুটে। তবে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, নিহত ত্রাণপ্রার্থীর সংখ্যা এক হাজার ৭৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ১২ হাজার ৮৯৪ জনেরও বেশি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে ইসরায়েল সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে গাজার বিভিন্ন এলাকায়।

চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশের চাপে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও ১৮ মার্চ থেকে ফের সামরিক অভিযান চালাচ্ছে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এই অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন নয় হাজার ৯২১ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৪১ হাজার ১৭২ জন।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ