Views Bangladesh Logo

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় একই পরিবারের ২৫ জনসহ নিহত আরও ৬৮ ফিলিস্তিনি

গাজা সিটির সাবরা এলাকায় ইসরায়েলি বিমান ও স্থল হামলায় একই পরিবারের ২৫ জনসহ নিহত হয়েছেন অন্তত ৬৮ জন ফিলিস্তিনি। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দিনভর হামলা চালিয়ে আরও ৩০৪ জনকে আহত করেছে ইসরায়েলি সেনারা।


গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় চিকিৎসা সূত্রকে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজার ২৮৩ জন নিহত এবং ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৫ জন আহত হয়েছেন।


সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেক মানুষ আটকা পড়েছেন বলেও আশঙ্কা করছে গাজা কর্তৃপক্ষ।


স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, রোববার ভোরে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের হামলায় সাবরার বেশ কয়েকটি বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। পরিবারগুলোর দাবি, ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় ৫০ জন আটকা পড়ে থাকতে পারেন। তাদের মধ্যে অন্তত ১৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও হাত দিয়ে মাটি সরিয়ে অন্যদের বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে, আহত ও নিখোঁজদের কাছে পৌঁছাতে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।


একজন স্বজন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের আত্মীয়-স্বজনেরা জীবিত অবস্থায় চাপা পড়ে আছেন। আমরা তাদের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছি, কিন্তু তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছি না’।


তিনি আরও অভিযোগ করেন, উদ্ধার অভিযান চালানোর সময় ইসরায়েলি ড্রোন থেকে গুলি চালানো হচ্ছে, যা উদ্ধারকাজে চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, আহত ও নিহতদের ছোট যানবাহনে করে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। অন্য এক ভিডিওতে দেখা গেছে, শোকার্ত এক মা চিৎকার করে বলছেন, ‘আমি আমার সব সন্তানকে হারিয়েছি’।


একই দিনে গাজা শহরের পশ্চিমাঞ্চলীয় শাতি শরণার্থী শিবির ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় তাল আল-হাওয়া এলাকায়ও ভয়াবহ বিমান হামলা চালানো হয়। নাসর জেলায় ল্যাভাল টাওয়ার ও পাশের একটি বাড়িতেও বোমা বর্ষণ করা হয়। অন্য হামলায় মধ্য গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে সাতজন নিহত হন। আহতদের মধ্যে রয়েছে চারজন শিশু।


জরুরি সূত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, জাতিসংঘের রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সির (ইউএনআরডব্লিউএ) একটি ক্লিনিকের কাছেও হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনারা।


গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষে মারা গেছেন একজন শিশুসহ আরও চারজন। এতে অনাহারে মৃত্যু বেড়ে ৪৪০ জনে দাঁড়িয়েছে, যাদের ১৪৭ জনই শিশু। এর মধ্যে জাতিসংঘ-সমর্থিত ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা (আইপিসি) গত মাসে উত্তর গাজাকে দুর্ভিক্ষ অঞ্চল ঘোষণা করার পর থেকেই মারা গেছেন ৩২ জন শিশুসহ ১৬৪ জন।


এ মাসের শেষ নাগাদ মধ্য ও দক্ষিণ গাজার দেইর আল-বালাহ এবং খান ইউনিসেও দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা করে সংস্থাটি বলছে, ২ মার্চ গাজার সমস্ত সীমান্ত ক্রসিং সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে পুরো অঞ্চলের ২৪ লাখ মানুষকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিয়েছে ইসরায়েল।




মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ