পাকিস্তানে জঙ্গিদের সঙ্গে গোলাগুলিতে সেনা কর্মকর্তাসহ ১১ নিরাপত্তা সদস্য নিহত
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে জঙ্গিদের সঙ্গে গোলাগুলিতে দেশটির অন্তত ১১ জন নিরাপত্তা সদস্য নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুইজন কর্মকর্তা রয়েছেন। বুধবার (৮ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা।
বিবৃতিতে বলা হয়, মঙ্গলবার রাতে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের ওরাকজাই জেলায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে একটি অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযানের সময় সেনাদের ‘কার্যকর প্রতিরোধে’র কারণে ১৯ জন জঙ্গি নিহত হয়। তবে গোলাগুলির সময় লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনাইদ আরিফ (৩৯) এবং তার সহকারী মেজর তায়্যব রাহাত (৩৩) সহ আরও ৯ জন সেনা সদস্য প্রাণ হারান।
এর আগে গত মাসে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে জঙ্গি হামলার সংখ্যা বেড়েছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে, আফগানিস্তান সরকার তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) জঙ্গিদের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আফগানিস্তান জানিয়েছে, তারা তাদের মাটিকে অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে হামলার জন্য ব্যবহার করতে দেবে না।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত মস্কো ফরম্যাট পরামর্শ সভায় আফগানিস্তানে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে পাকিস্তান। পাকিস্তানের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি মোহাম্মদ সাদিক বলেন, সম্মিলিত আঞ্চলিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এবং আফগান ভূখণ্ড থেকে পরিচালিত সব জঙ্গি গোষ্ঠীকে নির্মূল করতে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
এদিকে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বলেন, “আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আফগানিস্তানে এমন কোনো গোষ্ঠী নেই যারা আমাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে অন্য দেশের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছে।”
তবে তিনি জানান, আফগান গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আইএস এবং অন্যান্য গোষ্ঠী সম্প্রতি অঞ্চলটির অন্যান্য দেশে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে, যা আফগান সরকারের জন্য উদ্বেগের বিষয়।
২০২৫ সালের ১ লা জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানে সহিংসতার মাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময় ৩২৯টি সন্ত্রাসী হামলা ও পাল্টা অভিযানে অন্তত ৯০১ জন নিহত এবং ৫৯৯ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মোট সহিংসতার প্রায় ৯৬ শতাংশই ঘটেছে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে। এর মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়া সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল, যেখানে ৬৩৮ জন নিহত এবং ২২১টি ঘটনা ঘটেছে। বেলুচিস্তানে ২৩০ জন নিহত এবং ৮৫টি ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া একই সময়ে বেলুচিস্তানে ২৩০ জন নিহত এবং ৮৫টি সহিংস ঘটনা ঘটেছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে