Views Bangladesh Logo

৩১ বছর হিমায়িত ভ্রূণ থেকে শিশুর জন্ম, চিকিৎসাবিজ্ঞানে রেকর্ড

 VB  Desk

ভিবি ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওতে এক শিশুপুত্র জন্ম নিয়েছে, যে এসেছে ৩১ বছর ধরে হিমায়িত (সংরক্ষিত) হয়ে থাকা এক ভ্রূণ থেকে। চিকিৎসকদের মতে, এটি পৃথিবীর ইতিহাসে দীর্ঘতম সময় হিমায়িত থাকার পর জন্ম নেয়া জীবন্ত শিশুর ঘটনা।

ভ্রূণটি হিমায়িত করা হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। চলতি বছরের শুরুতে সেটি লিন্ডসে পিয়ার্সের গর্ভে স্থাপন করা হয়। গত শনিবার লিন্ডসে ও তার স্বামী টিম পিয়ার্স তাদের বহু প্রতীক্ষিত সন্তানের জন্মের আনন্দ পান। চিকিৎসকরা জানান, ভ্রূণটি ১১ হাজার ১৪৮ দিন ধরে হিমায়িত অবস্থায় ছিল।

পিয়ার্স দম্পতি বহু বছর ধরে সন্তান না হওয়ার কষ্টে ছিলেন। অবশেষে তারা ‘ভ্রূণ দত্তক’-এর পথ বেছে নেন। টেনেসিভিত্তিক রিজয়েস ফার্টিলিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই ভ্রূণ স্থানান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ক্লিনিকটি এমন পুরনো ভ্রূণ নিয়ে কাজের জন্য পরিচিত এবং তারা কোনো ভ্রূণ নষ্ট করে না।

ভ্রূণটি তৈরি হয়েছিল ১৯৯৪ সালে লিন্ডা আর্চার্ড নামের এক নারীর আইভিএফ চিকিৎসার সময়। একটি কন্যাসন্তান জন্মের পর এবং বিবাহবিচ্ছেদের ফলে তার কিছু অতিরিক্ত ভ্রূণ অব্যবহৃত থেকে যায়। দীর্ঘদিন সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগার পর তিনি 'স্নোফ্লেকস এমব্রায়ো অ্যাডপশন' নামের একটি দত্তক কর্মসূচিতে যুক্ত হন, যেখানে দাতা পরিবার নিজেরাই দত্তক পরিবার বেছে নিতে পারে।

লিন্ডা পিয়ার্স দম্পতিকে তিনটি ভ্রূণ দান করেন। এর মধ্যে একটি গলানোর সময় নষ্ট হয়ে যায়, বাকি দুটি গর্ভে স্থাপন করা হয়। একটি থেকে সফলভাবে সন্তান জন্ম নেয়।

রিজয়েস ফার্টিলিটির মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ডেভিড গর্ডন জানান, এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে হিমায়িত থাকার পর জন্ম নেয়া জীবন্ত শিশুর ঘটনা।

তবে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কেন এত ভ্রূণ বছরের পর বছর হিমায়িত অবস্থায় পড়ে থাকে?’ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ১৫ লাখ ভ্রূণ হিমায়িতভাবে সংরক্ষিত রয়েছে, যদিও মাত্র ২ শতাংশ সন্তানই জন্ম নেয় আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে।

এই প্রক্রিয়াকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে আইনগত বিতর্কও দেখা দিয়েছে। ২০২৪ সালে আলাবামার সুপ্রিম কোর্ট হিমায়িত ভ্রূণকে জীবন্ত সন্তানের মর্যাদা দিলে বিতর্ক শুরু হয় এবং কয়েকটি ক্লিনিক চিকিৎসা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করতে বাধ্য হয়।

লিন্ডা আর্চার্ডের কাছে এই পুরো অভিজ্ঞতা ছিল আবেগঘন। তিনি বলেন, ‘ওদের আমি বড় করতে পারিনি, কিন্তু ওরা এখন জীবনের একটা সুযোগ পেয়েছে—এটাই আমার শান্তি।’

তিনি আশা করেন, একদিন তিনি পিয়ার্স পরিবার এবং সেই শিশুটির সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।

তবে পিয়ার্স দম্পতির কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাদের সন্তান। লিন্ডসে বলেন, ‘আমরা কোনো রেকর্ড গড়ার জন্য আসিনি, আমরা শুধু একটা সন্তান চেয়েছিলাম।’ সিএনএন

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ