টানা বৃষ্টিতে ৫ জেলায় জলাবদ্ধতা, ফেনীর অবস্থা শোচনীয়
দুদিনের টানা ভারি বৃষ্টিতে দেশের পাঁচ জেলায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা ও বন্যার আশঙ্কা। সবচেয়ে বিপর্যস্ত ফেনী, যেখানে অন্তত ৪০টি গ্রামে ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। মুহুরী, কহুয়া ও সেলোনিয়া নদীর পানি বেড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে এসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে ২০টি স্থান ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রামগুলো। আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। সরকারি হিসাবে দুর্গত মানুষের সংখ্যা ১১ হাজার ৫০০ হলেও স্থানীয়রা বলছেন, এই সংখ্যা অনেক বেশি।
গত কয়েক দিনে ফেনীতে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে—মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে।
ফেনীতে এখন বৃষ্টি কিছুটা কমলেও নদীভাঙন বেড়েছে। বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক আংশিকভাবে চালু থাকলেও ফুলগাজীর অনেক এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ নেই।
মুহুরী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির লংগদুতে প্রবল বৃষ্টিতে সড়ক ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মেরুং ইউনিয়নের নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতার কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ এবং চলমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
এছাড়া সাতক্ষীরায় পৌর এলাকার এক-তৃতীয়াংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানে ৩৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। নদী উপকূলে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি প্রতি ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার করে বাড়ছে। তবে এখনো বিপৎসীমার আড়াই মিটার নিচে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি সমতল বাড়ছে। বিশেষ করে হালদা নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়াতে পারে, ফলে চট্টগ্রামের নিচু এলাকাগুলোতে বন্যা দেখা দিতে পারে।
মনু, ধলাই, খোয়াই নদীর পানি বাড়ছে, সুরমার পানি কমছে আর কুশিয়ারার পানি স্থিতিশীল। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সামনের দুই দিনে বাড়তে পারে, তবে এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে।
আগামী তিন দিন মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে