জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্তরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না: অ্যাটর্নি জেনারেল
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ’-এর বিরুদ্ধে সব রাজনৈতিক দল এখন ঐক্যবদ্ধ। আইসিটি আইনের আওতায় দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার সম্ভব বলেও মত দেন তিনি।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বিএফডিসি মিলনায়তনে ‘জুলাই আন্দোলনের চেতনা বাস্তবায়নে করণীয়’ শীর্ষক ছায়া সংসদে এসব মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। অনুষ্ঠানে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা।
তিনি বলেন, যারা ফ্যাসিস্ট শক্তির সঙ্গে যুক্ত, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব। বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থার কারণে নয়, বরং দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকেই সম্প্রতি দেশে মব সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ক্রোধ, স্বজন হারানো, গুম এবং গায়েবি মামলার প্রতিক্রিয়া। এটি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সংবিধান নিয়ে আলোচনায় আসাদুজ্জামান বলেন, নতুন সংবিধান লেখা যেতে পারে, তবে ১৯৭২ সালের সংবিধান জাতির আত্মত্যাগের প্রতিফলন। গত ১৫ বছরে সংবিধানে যেসব বিতর্কিত সংশোধনী এসেছে, তা বাদ দিয়ে এটিকে আরও যুগোপযোগী করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠবে কিনা, সেটা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত হলেও, যারা নিষিদ্ধ সত্ত্বাকে সহায়তা করছেন তারাও অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হবেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে।’
অনুষ্ঠানে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না। এসব হত্যাকাণ্ড শেখ হাসিনার সম্মতি ছাড়া হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে—দেশের প্রকৃত মালিক জনগণ। কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণকে বঞ্চিত করে ক্ষমতায় থাকতে পারে না।’
জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘তারা কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলেন না, ছিলেন সাধারণ নাগরিক। স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে শহীদ হয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের মূল চেতনা ছিল সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। এই চেতনা বাস্তবায়নে সরকার ও জনগণকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে যাতে কোনো ফ্যাসিস্ট শক্তি পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।’
প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, উপসচিব রোকেয়া পারভীন জুই, ড. এসএম মোর্শেদ, সাংবাদিক হাসান জাবেন ও আহমেদ সারওয়ার ভুইয়া। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেয়া হয়।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে