ডিক্যাব টকে জার্মান রাষ্ট্রদূত
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ মানদন্ড হিসেবে বিবেচিত হবে
ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ বলেছেন, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচন অংশগ্রহনমূলক, অবাধ ও সহিংসতামুক্ত হবে বলে আশা করেন তিনি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ মানদন্ড হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এ ডিক্যাব টকে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচন পরবর্তী অবস্থা, এয়ারবাস কেনা, স্টুডেন্ট ভিসা এবং শেখ হাসিনার মামলার রায় সংক্রান্ত বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডিক্যাব সভাপতি এ কে এম মইনুদ্দিন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারন সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন।
জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহম্মদ ইউনূস আগামী নির্বাচন অংশগ্রহনমূলক ও উৎসবমুখর পরিবেশে হবে বলে জানিয়েছেন এবং ৬০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আমরা তার এই বক্তব্যের প্রতি আস্থা রাখি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে কত সংখ্যক ভোটার অংশ নিচ্ছেন তা একটি বড় মানদন্ড হিসেবে বিবেচনায় আসবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ গত এক বছরের বেশি সময় ধরে একটি সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছে। এ সময়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সব সময় শান্ত ছিল না। সহিংসতার নানা ঘটনাও পরিলক্ষিত হয়েছে। এ কারনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের পর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে প্রাধান্য দিয়ে একটি রিকনসিলিয়েশনের উদ্যোগ নিতে হবে। যেন সব রাজনৈতিক পক্ষের মধ্যে সমঝোতামূলক পরিবেশ ফিরিয়ে এনে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা যায়। কারন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পূর্বশর্ত হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময়ে যে ধরনের অন্যায়, অত্যাচার হয়েছে, তার একটি যথাযথ বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া উচিত। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন মৃত্যুদন্ড সমর্থন করে না, শেখ হাসিনার রায়ের বিষয়েও জার্মানী ও ইইউ’র একই অবস্থান। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে জার্মানী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোনকে আশ্রয় দিয়েছিল। তবে সে সময়ের পরিস্থিতি আর এখনকার পরিস্থিতি এক নয়। সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে জার্মানীতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের কোন আবেদন আসেনি। যদি আবেদন আসে তখন সে বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে জামার্ন সরকারের অবস্থান জানানো হবে।
এয়ার বাস কেনা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময়ে এয়ারবাস কেনার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইইউভুক্ত দেশ- ফ্রান্সের সঙ্গে একটি সমঝোতা হয়েছিল। তবে সে সমঝোতা বর্তমান সরকারের সময়ে রক্ষা করা হয়নি। কোন দেশ কিংবা কোন বিমান সংস্থা কোন কোম্পানি থেকে উড়োজাহাজ কিনবে , সেটা তাদের নিজস্ব বিষয়। কিন্তু ইইউ’র অবস্থান অবশ্যই এয়ারবাসের পক্ষে। এ ধরনের বাণিজ্যিক সমঝোতার বিষয়গুলো দীর্ঘ মেয়াদে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কেও প্রভাব ফেলে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেক ক্ষেত্রেই আবেদনের সঙ্গে ভুয়া ডকুমেন্ট দেওয়া হয়। এটাই ভিসার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু জার্মানী সব সময়ই বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জার্মানীতে পড়ালেখার জন্য স্বাগত জানায়। তিনি সঠিক তথ্য ও ডকুমেন্ট দিয়ে ভিসার আবেদন করার জন্য বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ জানান।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে