জাকসু নির্বাচনের চলছে ভোট গণনা, রাতেই ফলাফল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে ২১টি হল থেকে ব্যালট বাক্সগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে নেয়া হয়েছে। সেখানে চলছে ভোটগণনা। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতেই গণনা শেষে ফল ঘোষণা করতে আশাবাদী নির্বাচন কমিশন।
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলের ভোট কেন্দ্রের ব্যালট বক্সগুলো সিনেট হলে আনা হয়েছে। ভোট গণনা সরাসরি দেখানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি স্থানে স্থাপিত এলইডি স্ক্রিনে। এখানেই ফল ঘোষণা করা হবে।
সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ২১টি হল কেন্দ্রের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ চলে। তবে পাঁচটার পরেও ভোটের সারিতে অপেক্ষমান থাকা শিক্ষার্থীরা ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছেন। শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হল কেন্দ্রে বিকেল পাঁচটা ৪০ মিনিটেও শিক্ষার্থীদের ভোটের সারিতে থাকতে দেখা গেছে।
নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন ও ফের নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের চারটি এবং ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থীরা। প্যানেল হলো, ‘সম্প্রীতির ঐক্য’, ‘সংশপ্তক পর্ষদ’, ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আংশিক প্যানেল। বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে ভোটগ্রহণে ব্যাপক অসঙ্গতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুললেও নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রশিবিরের প্যানেল সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট। আর বাগছাস সমর্থিত প্রার্থীরা একে-অপরের বিরুদ্ধে জাল ভোট, কারচুপি এবং নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন।
অন্যদিকে ভোট শেষ হওয়ার আধঘণ্টা আগে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন তিনজন শিক্ষকও। তারা হলেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা এবং অধ্যাপক নাহরিন ইসলাম খান। তাঁরা বিএনপিপন্থী শিক্ষক হিসেবে পরিচিত।
৩৩ বছর পর আয়োজিত এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ (নারী ও পুরুষ) মোট ২৫টি পদে ১৭৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ২১টি হল সংসদে ১৫টি করে মোট ৩১৫টি পদে ৪৭৭ জন প্রার্থী হয়েছেন। তবে ছাত্রীদের ১০টি আবাসিক হলে ১৫০টি পদের মধ্যে ৫৯টিতেই কোনো প্রার্থী নেই। একজন করে প্রার্থী রয়েছেন ৬৭টি পদে। সে হিসেবে মাত্র ২৪টি পদে ভোট হয়েছে।
জাকসুতে মোট সাতটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে চারটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ও তিনটি আংশিক প্যানেল রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ প্যানেলগুলো হলো ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেল, ছাত্রশিবির–সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট, প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের সম্প্রীতির ঐক্য ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ–সমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম।
আংশিক প্যানেল দিয়েছে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন, স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ এবং ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্টের সংশপ্তক পর্ষদ। এ ছাড়া অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন।
নির্বাচনে মোট ১১ হাজার ৯১৯ শিক্ষার্থী ভোটারের মধ্যে পাঁচ হাজার ৭২৮ জন ছাত্রী ও ছয় হাজার ১৫ জন ছাত্র।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে