Views Bangladesh Logo

মাইলস্টোন বিমান দুর্ঘটনা

নিহতদের পরিবার পাবে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ

 VB  Desk

ভিবি ডেস্ক

ত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ও আহতদের জন্য পৃথক ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এতে আহতদের জন্য সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকা এবং নিহতদের পরিবারকে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে নিহত শিশু ও শিক্ষার্থীদের পরিবারকে এক কোটি টাকা এবং প্রাপ্তবয়স্ক নিহতদের পরিবারকে ৮০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

আহতদের ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়েছে আঘাতের ধরন ও বয়স অনুযায়ী। অগ্নিদগ্ধ শিশুদের জন্য সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকা এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সর্বোচ্চ ৪০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। মধ্যম মাত্রার আহত শিশুদের জন্য ৩০ লাখ এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তুলনামূলক কম বা স্বল্পমেয়াদি আহতদের ক্ষেত্রে শিশুদের ১৫ লাখ এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

এ ছাড়া গুরুতর ও দীর্ঘমেয়াদি অগ্নিদগ্ধদের জন্য চিকিৎসা ও পুনর্বাসন প্যাকেজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ১৫ বছর চিকিৎসার প্রয়োজন এমন আহতদের জন্য ১৫ লাখ টাকা, ১০ বছর চিকিৎসার প্রয়োজন হলে ৯ লাখ টাকা এবং পাঁচ বছর চিকিৎসার প্রয়োজন হলে এক লাখ টাকার পুনর্বাসন সহায়তার প্রস্তাব করা হয়েছে।

নিহতদের পরিবারকে দেওয়া ক্ষতিপূরণের অর্ধেক এককালীন নগদ এবং বাকি অর্ধেক পাঁচ বছরের সঞ্চয়পত্র আকারে প্রদান করা হবে। আহত শিশুদের ক্ষেত্রে মোট ক্ষতিপূরণের ৫০ শতাংশ দুই কিস্তিতে দেওয়া হবে—প্রথম কিস্তির এক বছর পর দ্বিতীয় কিস্তি দেওয়া হবে। অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয়পত্রে রাখা হবে, যা শিশুর বয়স ২৫ বছর না হওয়া পর্যন্ত উত্তোলন করা যাবে না। প্রাপ্তবয়স্ক আহতদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য, তবে সঞ্চয়পত্র ভাঙানো যাবে পাঁচ বছর পর।

এই ক্ষতিপূরণ প্যাকেজের অর্থ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল ও জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল থেকে প্রদান করা হবে। সরকার গঠিত তদন্ত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে আহতদের ভবিষ্যৎ জীবনে সম্ভাব্য শারীরিক, মানসিক, আর্থিক ও সামাজিক ক্ষতি এবং পুনর্বাসনের প্রয়োজন বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

তবে দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত বিমানের তরুণ পাইলটের পরিবারের জন্য এই প্যাকেজে কোনো ক্ষতিপূরণ সুপারিশ করা হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, বিমানবাহিনী তাদের নিজস্ব বিধিমালা অনুযায়ী পাইলটের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে।

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই মডেলের একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় প্রায় ৩৫ জন নিহত এবং প্রায় ১৭২ জন আহত হন। নিহত ও আহতদের অধিকাংশই শিশু শিক্ষার্থী, যাদের বড় একটি অংশ অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ