বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক রাখল যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের উপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানসহ মোট ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক হার নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হতে চলায় ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন। তবে, ৯ জুলাই থেকে শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে ১ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা চিঠিতে ট্রাম্প বলেছেন, ‘২০২৫ সালের ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো সব বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসবে। এটি খাতভিত্তিক শুল্কের সঙ্গে আলাদাভাবে যোগ হবে। উচ্চ শুল্ক এড়াতে যদি কোনো পণ্য ঘুরপথে যুক্তরাষ্ট্রে আনা হয়, তাহলে সেই পণ্যের ওপরও উচ্চ শুল্কই আরোপ করা হবে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘দয়া করে বুঝুন, ৩৫ শতাংশ শুল্ক আমাদের দেশের সঙ্গে আপনার দেশের যে বড় বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তা দূর করার জন্য যথেষ্ট নয়— এই হার আসলে তার চেয়ে অনেক কম। আপনি নিশ্চয়ই জানেন, যদি বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের কোনো কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা গড়ে পণ্য উৎপাদন করে, তাহলে সেই পণ্যের ওপর কোনো শুল্ক থাকবে না। বরং আমরা দ্রুত, পেশাদারভাবে এবং নিয়ম মেনে সব অনুমোদন দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব—অর্থাৎ কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছে কোন কোন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়— তার তালিকাসহ প্রস্তাবিত চুক্তির এনেক্সার ডকুমেন্ট বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা থাকলেও, সোমবার বিকেল পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, নতুন এই সময়সীমা নির্ধারণের ফলে বর্ধিত এই শুল্ক প্রত্যাহার বা কমাতে—চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আলোচনায় বাড়তি সময় পাওয়া যাবে।
প্রস্তাবিত চুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ইউএসটিআরের পক্ষ থেকে তা স্থগিত করে বুধবার মিটিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়, যাতে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশের উপর ৩৭ শতাংশসহ বিভিন্ন দেশের উপর বিভিন্ন হারে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। পরে সকল দেশের ওপর ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক কার্যকর করে— অবশিষ্ট ট্যারিফ ৩ মাসের জন্য স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র, যার মেয়াদ আগামী ৯ জুলাই শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন তা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে