ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পশ্চিমবঙ্গে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাণিজ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে অবস্থান করছে জাতিসংঘের ৪০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। আন্তর্জাতিক সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার চলমান বাণিজ্য পরিস্থিতি নিয়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সফরকালীন সময়ে প্রতিনিধি দলটি অর্থনৈতিক ও লজিস্টিক বিষয়গুলোতে গুরুত্বারোপ করেন এবং আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য কীভাবে আরও জোরদার করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করেন।
এই পরিদর্শনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সহযোগিতার সুযোগ বাড়ানোর পথ খোঁজা এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো চিহ্নিত করা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের এই প্রতিনিধি দলটি দিল্লি থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছে সড়কপথে ফুলবাড়ি সীমান্তে যান। সেখানে তারা বিএসএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ঘুরে দেখেন। সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত, আমদানি-রপ্তানি বিষয়ক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ শেষে তারা জানান, দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য কার্যক্রম নিয়ে তারা সন্তুষ্ট।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়, যার প্রভাব পড়ে বাণিজ্যেও। তবে ঈদের ছুটির পর পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলে সীমান্তপথে আমদানি-রপ্তানিতে পুনরায় গতি ফেরে।
জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা শুধুমাত্র ভারত-বাংলাদেশ নয়, বরং দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য সীমান্তীয় বাণিজ্য পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখছেন।
প্রতিনিধিদলের সদস্য অর্থনীতিবিদ ক্রিস গারভে বলেন, আমরা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পরিদর্শন করেছি। তারপর ভারত-নেপাল সীমান্ত। মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সীমান্তবর্তী যোগাযোগ ব্যবস্থা, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি খতিয়ে দেখা হয়। প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে কীভাবে সুসম্পর্ক বজায় রাখা যায় এবং ব্যবসা আরও উন্নত করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা দুই দেশের (ভারত-বাংলাদেশ) মধ্যে অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট। দুই দেশ তাদের কাজের গতি বাড়ানোর জন্য ডিজিটাল পরিষেবা চালু করেছে, যা প্রশংসনীয়।
দলের আরেক সদস্য রাজেন সুদেশরত্ন বলেন, আমরা মূলত সীমান্তবর্তী এলাকায় বাণিজ্যে স্থল বন্দরের বিদ্যমান সমস্যাগুলো পর্যবেক্ষণ করি। প্রতিটি দেশ বাণিজ্যে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়। কিছু জায়গায় ভৌগোলিক সমস্যা থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত সমস্যা থাকতে পারে। যখন তিনটি দেশ সীমানা ভাগ করে নেয় তখন তিনটি জায়গায় বিভিন্ন নিয়ম অনুসারে বাণিজ্য করা হয়। আমরা সেই সমস্ত দিকগুলো, সরকার কীভাবে আমদানি ও রপ্তানিতে সহায়তা করতে পারে এবং ডিজিটাল মিডিয়া ব্যবহার করে কীভাবে বাণিজ্য খরচ কমানো যায় তা দেখি।
তিনি আরও বলেন, এবার আমরা নেপালেও একটি কর্মশালার আয়োজন করেছি। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত এবং নেপালের সকল নীতিনির্ধারক, কাস্টমস, রাজস্ব বিভাগ এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমরা তাদের কাছে উপস্থাপন করেছি সীমান্ত এলাকায় কী কী সুযোগ-সুবিধা থাকা উচিত এবং বাণিজ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আর কী কী করা উচিত। এসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। চারটি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে