কারওয়ানবাজারে মালয়েশিয়া যেতে না পারা শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মালয়েশিয়ায় পাঠানোর দাবিতে অভিবাসী শ্রমিকদের বিক্ষোভে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ ছিল। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দেশটিতে পাঠানো সম্ভব না হলে সরকারের কাছে বিকল্প কর্মসংস্থান ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণও দাবি করেন শ্রমিকরা।
বিক্ষোভকারীরা প্রায় আঠারো হাজার শ্রমিকের বৃহত্তর দলের অংশ, যারা বিদেশে কর্মসংস্থানে মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষের বেধে দেয়া সময়সীমা ও ফ্লাইট মিস করেছিলেন। রিক্রুটিং এজেন্সিকে টাকা পরিশোধের পরও গত বছরের ৩১ মে শেষ হওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশটিতে যেতে পারেননি তারা। ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভের পর কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি মেনে নিতে ও সমাধান খুঁজে বের করতে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা শুরু করেছেন।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিপরীত পাশে পান্থপথে ঢোকার রাস্তাটিসহ সোনারগাঁও মোড় আটকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ শুরু হলে কারওয়ানবাজারের চারপাশে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাপক যানজটে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। পরে কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বুঝিয়ে পুরোনো এলিফ্যান্ট রোডের শ্রমকল্যাণ ভবনে আলোচনায় বসেন।
বিক্ষোভকারীদের পাঁচটি মূল দাবির অন্যগুলো হচ্ছে, যেসব শ্রমিকের ই-ভিসা ৩১ মের আগে জারি হয়েছিল, কিন্তু বিএমইটি ছাড়পত্র পাননি এবং যারা সমস্ত প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন, তাদের অবিলম্বে মালয়েশিয়ায় পাঠানো, নতুন সাক্ষাৎকার নেয়া হোক বা না হোক, কোনো কর্মীকে এই প্রক্রিয়া থেকে বাদ না দেয়া, অবিলম্বে নির্দিষ্ট নিয়োগের তারিখ নির্ধারণ করে লিখিত মেমোরেন্ডাম দেয়া এবং মেমোরেন্ডামটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান উপদেষ্টা ও প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টার মাধ্যমে জমা দেয়া।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা জানান, তারা যথাযথ প্রক্রিয়ায় রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে ছয় লাখ টাকা করে জমা দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে যেতে পারেননি। রিক্রুটিং এজেন্টগুলো প্রায় দেড় বছর ধরে ঘোরালেও তাদের টাকা ও পাসপোর্ট ফেরত দিচ্ছে না। তারা অনেকেই অর্থনৈতিক সংকটে আছেন। মালয়েশিয়া যেতে না পারলে তাদের টাকা ও পাসপোর্ট ফেরত দেয়ার দাবিও জানান বিক্ষোভকারীদের অনেকে।
এজন্য সরকারের গাফিলতিকে দায়ী করে বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে বার বার আশ্বাস দেয়া হলেও আমাদেরকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হচ্ছে না। ঋণ করে যাওয়ার টাকা যোগাড় করেছি। ঋণের সুদ দিন দিন বাড়ছে। এখন সংসার খরচও চালাতে পারছি না’।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকারর পর মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার চালু হয় ২০২২ সালের আগস্ট মাসে। দেশটিতে গত বছরের ৩১ মে পর্যন্ত ১০১টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে পৌনে পাঁচ লাখ কর্মী যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টিকিট জটিলতাসহ নানা কারণে যেতে পারেননি প্রায় আঠারো হাজার শ্রমিক।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে