তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, খুলে দেয়া হলো ব্যারাজের সব জলকপাট
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং টানা কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। সোমবার সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও দুপুরের পর থেকে তা বাড়তে শুরু করে। রাত ৯টায় পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে ছিল এবং সোমবার সকালে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে।
হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা পাড়ের নীলফামারীর ডিমলা ও লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষজন আতঙ্কে রয়েছেন। নদীর তীরবর্তী কিছু নিম্নাঞ্চলে ইতোমধ্যে পানি ঢুকে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, যদি পানির স্তর আরও বাড়ে তাহলে চরাঞ্চল ও নিম্নভূমিগুলো প্লাবিত হতে পারে। এতে ফসলি জমি ও ঘরবাড়ির ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। নদীপাড়ের বাসিন্দারা তাদের গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন।
ডিমলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তিস্তায় পানি বেড়েই চলেছে। এখনো ঘরবাড়ি না ডুবলেও মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।’
এ বিষয়ে পাউবোর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল ৬ টা থেকে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে।
এদিকে, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (বাপাউবো) জানিয়েছে, আগামী তিন দিনে (১৪ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর) রংপুর বিভাগের প্রধান নদীগুলো, বিশেষ করে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারের পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এর মধ্যে তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এই সময়ে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নদীপাড়ের মানুষদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে