যাত্রাবাড়ীতে চোর সন্দেহে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মীরহাজীরবাগে চোর সন্দেহে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাপ্পি (১৫) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে স্থানীয় কয়েকজন তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে। বুধবার সন্ধ্যায় অচেতন অবস্থায় রাস্তায় ফেলে গেলে হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে পুলিশ বাপ্পির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠায়। এর আগে নিহতের মা পারুল বেগম বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ এ ঘটনায় ফৌজিয়া রওশন আক্তার প্রীতি নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহত বাপ্পি বাগেরহাটের শরণখোলার কদমতলা গ্রামের রিকশাচালক শাহজাহান ও কারখানাকর্মী পারুল বেগমের ছেলে। সে ধোলাইপাড়ের প্রেমগলিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থেকে স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করত।

বাপ্পির বড় ভাই পারভেজ জানান, মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় কাপশি রাসেল, মোল্লা শুভ ও শাকিব তাদের বাসায় এসে অভিযোগ করে-বাপ্পি নাকি এক বাসা থেকে টাকা ও প্রিপেইড কার্ড চুরি করেছে। এরপর তারা বাপ্পিকে ধরে মীরহাজীরবাগের আবু হাজী মসজিদ গলির এক বাড়ির নিচতলার একটি ক্লাবঘরে নিয়ে যায় এবং রাতভর পিটুনি দেয়।

বুধবার সকালে আবার বাসায় এনে চুরির জিনিসপত্র দাবি করে। কিছু না পেয়ে আবার নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। বিকেলে অচেতন অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যায় তারা। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাপ্পি মারা যায়।

বাপ্পির বাবা শাহজাহান বলেন, 'আমার ছেলে যদি অপরাধ করেও থাকে, তাহলে পুলিশের হাতে দিতে পারত। এমন নির্যাতনে কেন মেরে ফেলল?'

যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান জুয়েল জানান, প্রাথমিক তদন্তে নির্যাতনের কারণেই কিশোরটির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।