আজ সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় আজ বুধবার থেকে সারাদেশে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ। একইসঙ্গে তিন শিক্ষক নেতাকে শোকজ নোটিশ জারির প্রতিবাদেও এই কর্মসূচি চলছে। এতে টানা তৃতীয় দিনের মতো স্থগিত রয়েছে বার্ষিক পরীক্ষা।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন জানান, সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি নেই, বরং নেতৃবৃন্দকে শোকজ করা হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে দেশব্যাপী আন্দোলন আরও জোরদার করা ছাড়া উপায় নেই।
শিক্ষকদের অভিযোগ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া প্রতিশ্রুতির আলোকে তিনটি দাবি ২২ দিন ধরে ঝুলে আছে। দৃশ্যমান উদ্যোগ না থাকায় পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
সংগঠন সূত্র জানায়, সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে। পাশাপাশি দাবি উপস্থাপনের কারণে আহ্বায়ক মো. আবুল কাসেম, মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ, খাইরুন নাহার লিপি, মু. মাহবুবুর রহমান এবং ২০২৩ ও ২০২৫ ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষককে শোকজ করায় শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আজ বুধবার বেলা ১১টায় দেশের প্রতিটি উপজেলা শিক্ষা অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো—
১. সহকারী শিক্ষকদের বেতনস্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা।
২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা দূর করা।
৩. সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির ব্যবস্থা করা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এখানে কর্মরত আছেন তিন লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডে বেতনভুক্ত হলেও সহকারী শিক্ষকরা এখনও ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন। গ্রেড উন্নয়নসহ কয়েকটি দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন তারা।
এর আগে ৮–১২ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন শিক্ষকরা। সে সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হন। পরে সরকারের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করলেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অগ্রগতি না থাকায় শিক্ষকরা আবার কর্মবিরতিতে ফিরেছেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে