আলোচনা ব্যর্থ, ফের ‘মার্চ টু যমুনা’র হুঁশিয়ারি শিক্ষকদের
শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি। ফলে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেল পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়ে স্থগিত রাখা ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালনের হুশিয়ারি দিয়েছে আন্দোলনকারীদের সংগঠন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা) বাড়ি ভাড়া ছাড়াও শিক্ষক-কর্মচারীদের অন্য দুটি দাবি হচ্ছে, দেড় হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করা। এসব দাবিতে গত পাঁচদিন ধরে আন্দোলনে নেমেছেন সারা দেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে নানা কর্মসূচি এবং সব বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন তারা।
জোটের প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দাবির বিষয়ে কিছুটা নমনীয়তা দেখান। তারা বলেন, এ বছর ১০ শতাংশ হারে এবং আগামী অর্থবছরে আরও ১০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর নিশ্চয়তা দিতে হবে।
তবে বর্তমানে বাজেট বরাদ্দ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর্যায়ে থাকা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পাঠানোর কথা উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার তাদের জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে পাঁচ শতাংশ (বাড়ি ভাড়া) তারা দিতে পারবে এবং সেটি ন্যূনতম দুই হাজার টাকা থাকবে। এখন যেখানে টাকা নেই, সেখানে এর থেকে বেশি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এরপর সচিবালয় থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফিরে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি বলে জানান জোটের সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন আজিজী। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়ে তিনি ঘোষণা দেন, এর মধ্যে তাদের দাবি না মানা হলে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবেন।
এই শিক্ষক নেতা বলেন, ‘উপদেষ্টা আসলে আলোচনার নামে আইওয়াশ করেছেন শিক্ষকদের সঙ্গে’৷ এখন প্রধান উপদেষ্টাকেই শিক্ষকদের দাবি পূরণে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে এই শিক্ষক নেতা বলেন, ‘আমাদের আর কারও উপর ভরসা নাই। আমাদের একমাত্র ভরসা আপনি, যদি মনে চায়, সমাধান করেন। আর যদি মনে না চায়, দাবানলের মতো আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে।’
দেলোয়ার হোসেন আজিজী উল্লেখ করেন, প্রধান উপদেষ্টা উদ্যোগ নিয়ে সমস্যার সমাধান না করলে শিক্ষকেরা বিকেল পাঁচটায় মার্চ টু যমুনা কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হবেন। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পাঠিয়ে শিক্ষকদের গুলি করে হত্যা করুন। তবুও দাবি আদায় না হলে শিক্ষকেরা ক্লাসে ফিরবেন না’।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে