‘ননসেন্স ছড়ার’ প্রবর্তক সুকুমার রায়ের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
আজ (বুধবার) বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায়ের মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মাত্র ৩৭ বছর বয়সে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। একাধারে লেখক, ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, রম্যরচনাকার, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার ও সম্পাদক হিসেবে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেন। তাকে উপমহাদেশের সাহিত্যে 'ননসেন্স ছড়া'র প্রবর্তক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
মাত্র ৩৬ বছরের জীবনে তিনি শিশুদের জন্য রচনা করেছেন অসংখ্য জনপ্রিয় ছড়া ও কবিতা, যা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। তাঁর বিখ্যাত কিছু ছড়া হলো: ‘বাবুরাম সাপুড়ে, কোথা যাস বাপুরে, আয় বাবা দেখে যা, চলে হনহন, ছোটে পনপন, ঘোরে বনবন, কাজে ঠনঠন, বায়ু শনশন, শীতে কনকন, কাশি খনখন, ফোঁড়া টনটন, মাছি ভনভন, থালা ঝন ঝন, হলদে সবুজ ওরাং ওটাং, ইট পাটকেল চিত্পটাং, গন্ধ গোকুল হিজিবিজি এবং নো অ্যাডমিশান ভেরি বিজি।’
সুকুমার রায়ের লেখা ‘আবোল-তাবোল’ (কবিতার বই), ‘হ-য-ব-র-ল’ (গল্প), ‘পাগলা দাশু’ (গল্প সংকলন) এবং নাটক ‘চলচ্চিত্তচঞ্চরী’ বিশ্বসাহিত্যে সর্বকালের সেরা ব্যঙ্গাত্মক শিশুসাহিত্যের অন্যতম বলে বিবেচিত। সাহিত্য সমালোচকদের মতে, কেবল ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’র মতো কয়েকটি ধ্রুপদী সাহিত্যই এদের সমকক্ষ।
১৮৮৭ সালের ৩০ অক্টোবর কলকাতার এক ব্রাহ্ম পরিবারে সুকুমার রায়ের জন্ম। তার আদি নিবাস ছিল ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জে। ১৯০৬ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় বিএসসি(অনার্স) ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ১৯১১ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি ইংল্যান্ডে যান এবং আলোকচিত্র ও মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন। ১৯১৩ সালে কলকাতায় ফিরে আসার পর তিনি ভারতের একজন অগ্রগামী আলোকচিত্রী ও লিথোগ্রাফার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
বাবার মৃত্যুর পর জনপ্রিয় শিশুতোষ পত্রিকা ‘সন্দেশ’-এর সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। তার সম্পাদনায় ‘সন্দেশ’ বাংলা শিশুসাহিত্যে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করে। মৃত্যুর বহু বছর পরেও জনপ্রিয় শিশু সাহিত্যিকদের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছেন তিনি।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে