ধামরাইয়ে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ রথযাত্রা শুরু শুক্রবার
ঢাকার ধামরাইয়ে ৪৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী যশোমাধব দেবের রথযাত্রা শুরু হচ্ছে শুক্রবার (২৭ জুন)। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ কাঠের তৈরি রথযাত্রাটি ঘিরে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে পুরো উপজেলা।
৫ জুলাই শনিবার উল্টোরথ টানার মধ্য দিয়ে নয়দিনের মূল উৎসব শেষ হলেও মাসজুড়ে চলবে ঐতিহ্যবাহী রথমেলা। মেলায় বসেছে দুই শতাধিক স্টল ছাড়াও নাগরদোলা, সার্কাস, পুতুল নাচসহ নানা বিনোদনের পসরা। দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে লাকি কূপনও।
বালিয়াটির জমিদারেরা বাঁশ দিয়ে তৈরি করে বাংলা ১০৭৯ সালে প্রচলন করেন রথযাত্রা উৎসবের। কয়েক বছর পর ৬৭ ফুট কারুকার্যমণ্ডিত কাঠের রথ তৈরি করা হয়। জমিদারি প্রথা বিলোপের পর ১৯৭১ সালের আগ পর্যন্ত রথ উৎসব পরিচালনা করেন মির্জাপুরের দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনারা রথটি আগুনে পুড়িয়ে দিলেও যুদ্ধ শেষে আরো একটি রথটি তৈরি করেন ভক্তরা। ২০১০ সালে ভারতের সহযোগিতায় ৩৭ ফুট উঁচু ও ২৫ ফুট প্রস্থের কাঠের রথটি নির্মিত হয়।
ধোয়া-মোছার পর এবারও বিশালাকার রথটিকে নতুন রঙের প্রলেপে বর্ণিল করে তুলেছেন রংশিল্পীরা। নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় নতুন রূপে সেজেছে এটি। রথযাত্রা ও রথমেলা ঘিরে দেশ-বিদেশের অসংখ্য দর্শনার্থী ও ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত এখন ইতিহাসখ্যাত ধামরাই। ঘরে ঘরে এসেছেন দূর-দূরান্তের আত্মীয়-স্বজনেরাও।
শ্রী শ্রী যশোমাধব মন্দির ও রথ উৎসব পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন বলেন, ‘কালের বিবর্তনে পুরো উৎসবটিই এখন ধর্মীয় ভাবধারায় নয়, সর্বজনীন মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সবার সহায়তায় এবারও সফল হবে এবারের উৎসব’।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব জায়গায় পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন থাকবে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে থাকবে গোয়েন্দা নজরদারিও।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, ‘পুলিশসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসনও। আশা করছি, অন্য বছরের মতো এবারও উৎসবমুখর পরিবেশে রথযাত্রা উদযাপিত হবে’।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে