বন্ধ ঘোষণার পর হল ছাড়ছেন বাকৃবি শিক্ষার্থীরা
চলমান উত্তেজনার জেরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পর সোমবার সকাল থেকে হল ছাড়তে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং বিজিবিসহ বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
শিক্ষকদের জিম্মি করা এবং বহিরাগতদের হামলায় প্রায় ১০ জন আহত হওয়ার ঘটনার পর এই সিদ্ধান্ত নেয় বাকৃবি কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রায় ২০০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে রোববার দিনভর অবরুদ্ধ করে রেখেছিল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে বহিরাগতরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে হামলা চালালে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
মূলত ভেটেরিনারি সায়েন্স ও অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অনুষদের শিক্ষার্থীদের প্রায় এক মাস ধরে চলা আন্দোলনের জেরে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তারা দুটি অনুষদের ডিগ্রি একত্রিত করে একটি সমন্বিত ডিগ্রি চালু করার দাবি জানাচ্ছিল। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি ভোটাভুটির আয়োজন করলেও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।
রোববার দুপুরে উপাচার্য এবং প্রায় ২০০ শিক্ষককে জয়নুল আবেদীন অডিটোরিয়ামে অবরুদ্ধ করে রাখে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম এবং জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তবে সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। ২৫০-৩০০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের কাছে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে অবরুদ্ধ শিক্ষকদেরকে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত করে দেয়। এই সংঘর্ষে সাংবাদিকতাসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম জানান, রোববার সন্ধ্যা থেকে ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।”
এমন ঘটনায় রোববার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যদের এক জরুরি বৈঠকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল আলিম জানান, সব শিক্ষার্থীকে সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিশ্ববিদ্যালয় আবার খুলে দেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আকস্মিক এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করে জুলাই ৩৬ হলের ছাত্রী তাসফিয়া আফরিন বলেন, “আমাদের পরীক্ষা চলছিল। এই হঠাৎ বন্ধের কারণে আমরা বিপাকে পড়েছি।”
কর্তৃপক্ষ বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং শিক্ষার্থীদের দাবি সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে