দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম বিশ্বজয়

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে তাদের প্রথম আইসিসি বিশ্ব শিরোপা। প্রায় ২৭ বছরের ট্রফি-খরা কাটিয়ে চোকার্স তকমা ঘুচিয়েছে প্রোটিয়ারা।

টস জিতে বোলিং নেয়ার সিদ্ধান্তই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। রাবাদা ও জেনসেনের আগুন ঝরানো বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৬৭ রানে ৪ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। রাবাদা প্রথমে খাজা ও ক্যামেরন গ্রিনকে তুলে নেন, জেনসেন ফেরান লাবুশেনকে। এরপর স্মিথ (৬৬) ও ওয়েবস্টার (ফিফটি) সাময়িক প্রতিরোধ গড়লেও শেষ পাঁচ উইকেটে মাত্র ২০ রান যোগ করে ২১২ রানে গুটিয়ে যায় অজিরা।

প্রোটিয়ারা নিজেদের প্রথম ইনিংসে খাদের কিনারে চলে যায়—৩০ রানে ৪ উইকেট হারায়। স্টার্কের বলে প্রথম বলেই বোল্ড হন মার্করাম। রিকেলটন, মুল্ডার ও স্টাবসও তাড়াতাড়ি ফিরলে চাপ আরও বাড়ে। বাভুমা ও বেডিংহ্যাম কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও কামিন্সের ৬ উইকেটে মাত্র ১৩৮ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়া পায় ৭৪ রানের লিড।

দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রাবাদা ৯ উইকেট আর এনগিডি ৩ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ২০৭ রানে থামিয়ে দেয়। ফলে জয়ের লক্ষ্যে ২৮২ রানের টার্গেট পায় প্রোটিয়ারা। শুরুটা ভালো না হলেও ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন মার্করাম। ২০৭ বলে ১৩৬ রানের এক অসাধারণ ইনিংস খেলেন তিনি। তীব্র মনোযোগ, দায়িত্বশীলতা আর পরিস্থিতি অনুযায়ী শট খেলার নিদর্শন ছিল তার ব্যাটে। জয়ের মাত্র ৬ রান দূরে থাকতে আউট হলেও তার কাজ তখন প্রায় শেষ।

অধিনায়ক বাভুমা ছিলেন আরেক নায়ক। ইনজুরি নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে খেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৪ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। প্রথম ইনিংসেও করেছিলেন ৩৬ রান। ডেভিড বেডিংহ্যামও দুই ইনিংসেই কার্যকর ব্যাটিং করেন—প্রথম ইনিংসে ৪৫, দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন।

ম্যাচের শেষদিকে ব্যাটিং সহজ হয়ে যাওয়ায় স্টার্ক, কামিন্স কিংবা হ্যাজেলউড কেউই তেমন সুইং পাননি। লায়নের স্পিনও কাজে লাগেনি। ফলে ২৮২ রানের লক্ষ্য ৫ উইকেট হাতে রেখেই ছুঁয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা।