চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবেশপথে স্কপের অবরোধ করে স্কপের বিক্ষোভ
চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশিদের দেওয়ার ‘পাঁয়তারা’ এবং লালদিয়া চর ও পানগাঁও টার্মিনালের বিদেশি অপারেটরদের ইজারা বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবেশপথে অবরোধ করেছেন শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে স্কপের নেতাকর্মীরা নগরীর তিনটি পয়েন্ট—বড়পুল মোড়, সিম্যান্স হোস্টেল গেইট এবং বনবদর টোল প্লাজা—এ অবস্থান নিয়ে বন্দর অবরোধ শুরু করেন। এ কর্মসূচিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট এবং সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনও সমর্থন জানিয়েছে।
অবরোধের কারণে বন্দরমুখী কভার্ডভ্যান, ট্রাক ও ট্রেইলারের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। স্কপ নেতা ও ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি তপন দত্ত জানান, 'আমরা চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদে আন্দোলন করছি। আমাদের অবরোধ কর্মসূচি বেলা ১টা পর্যন্ত চলবে।'
স্কপ নেতা ফজলুল কবির মিন্টু বলেন, 'বন্দরের টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।' কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহ আলমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দও বড়পুল মোড়ের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, স্কপের অবস্থান সত্ত্বেও বন্দরের অপারেশনাল কাজে কোনো ব্যাঘাত হচ্ছে না।
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালটি ২০০৭ সালে চালু হয়। এর পরিচালনার দায়িত্ব আগে আওয়ামী লীগের আমলে সাইফ পাওয়ারটেকের হাতে ছিল। চুক্তি শেষে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেডকে অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে আমিরাতভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে পিপিপি ভিত্তিতে সমঝোতা হয়, যা এখন হাই কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। রিট মামলার রায় আগামী ৪ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হবে।
লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল ৩০ বছরের জন্য ডেনমার্কের এপি মোলার মায়ের্সক গ্রুপের সহযোগী এপিএম টার্মিনালস-এর হাতে, আর পানগাঁও নৌ টার্মিনাল ২২ বছরের জন্য সুইজারল্যান্ডের মেডলগ এসএকের হাতে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
কিছু স্থানীয় পর্যবেক্ষক বিদেশি কোম্পানির অংশগ্রহণকে ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উদ্বেগের বিষয় হিসেবে দেখছেন, তবে ব্যবসায়ী ও বন্দর ব্যবহারকারীদের একটি অংশ এটিকে বিদেশি বিনিয়োগের ইতিবাচক বার্তা হিসেবে মূল্যায়ন করছেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে