ভাঙ্গায় পরিস্থিতি শান্ত, ছয় ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অবরোধ ও সহিংসতায় ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক এবং ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে আটকে থাকা সব যানবাহন চলাচল শুরু করেছে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শামসুল আজম গণমাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বিকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে বিভিন্ন দপ্তরে হামলা ও ভাঙচুরের ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা হয়নি।
এর আগে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে ভাঙ্গা। বিক্ষোভ একপর্যায়ে সহিংস রূপ ধারণ করে। থানা, উপজেলা পরিষদ, হাইওয়ে থানা ও পৌরসভায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়। এ সময় ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক এবং ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হন। সহিংসতায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকও আহত হয়েছেন।
আজ দুপুর ১টার দিকে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙ্গা গোলচত্বরে অবস্থান নেয়। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে তারা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান করেছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে অবস্থান নিয়েও বিক্ষুব্ধদের কাউকে বাধা দিতে দেখা যায়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বেলা ১টার দিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে কয়েক হাজার জনতা লাঠিসোঁটা, রামদা, দেশীয় অস্ত্রসহ মিছিল নিয়ে যোগ দিতে যায়। পরক্ষণেই দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায় তারা। এ সময় ১০ থেকে ১২ জন আর্মড পুলিশ সদস্য দৌড়ে পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মসজিদে আশ্রয় নেন। উত্তেজিত জনতার ইটপাটকেলে রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়াতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের। পরে কিছু সময় তাদের ঘিরে রাখে উত্তেজিত জনতা। একপর্যায়ে মাদ্রাসা ও মসজিদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে পুলিশ সদস্যদের রক্ষা করেন।
এরপর সেখান থেকে বিক্ষুব্ধরা থানার দিকে চলে যায়। থানায় থাকা গাড়ি ও থানা ভবনে ভাঙচুর করে। ভেতরে আটকা পড়েন পুলিশ সদস্যরা। পরে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়, আগুন দেয়া হয় সেখানে থাকা মোটরসাইকেলে। পরে হাইওয়ে অফিস ও পৌরসভা কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন মাইটিভির ভাঙ্গা উপজেলা প্রতিনিধি সরোয়ার হোসেন।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রশাসনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ দিন সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা মাঠে অবস্থান নিলে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় হঠাৎ করে বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হন এলাকাবাসী।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, ‘আমরা বিক্ষুব্ধদের শান্ত করার চেষ্টা করছি এবং নির্বাচন কমিশনে জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের বলা হয়েছে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে। আমরা দ্রুত প্রতিবেদন দিলে আশা করি দু-এক দিনের মধ্যে সমাধান হবে।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে