চাকসুতে ভিপি-জিএসসহ ২৪টি পদে ছাত্রশিবিরের জয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভিপি–জিএসসহ ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টিতেই জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’। এর মাধ্যমে ৪৪ বছর পর চাকসুতে নেতৃত্বে ফিরল ছাত্রশিবির।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। প্রার্থী ও ভোটারদের অংশগ্রহণে পুরো ক্যাম্পাস উৎসবমুখর ছিল।”
শিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন ইতিহাস বিভাগের ২০১৭–১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইব্রাহিম হোসেন রনি। তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ইতিহাস বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাঈদ বিন হাবিব জয়ী হয়েছেন ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্রার্থী মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।
শিবিরপন্থি প্যানেলের বাইরে সহ–সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ছাত্রদল সমর্থিত আইয়ুবুর রহমান তৌফিক এবং সহ–খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী তামান্না মাহবুব প্রীতি জয়লাভ করেছেন।
শিবিরের প্যানেল থেকে বিজয়ী হয়েছেন—খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক মোহাম্মদ শাওন, সাহিত্য–সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক হারেস মাতাব্বর, সহ–সাহিত্য সম্পাদক জিহাদ আহনাফ, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, সহ–দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল আদন নুসরাত, সমাজসেবা ও পরিবেশ সম্পাদক তাহসিনা রহমান, গবেষণা ও উদ্ভাবন সম্পাদক তানভীর আঞ্জুম শোভন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ছাত্রীকল্যাণ সম্পাদক নাহিমা আক্তার দীপা, সহ–ছাত্রীকল্যাণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদাউস রিতা, স্বাস্থ্য সম্পাদক আফনান হাসান ইমরা, মুক্তিযোদ্ধা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক মোনায়েম শরীফ, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক মেহেদি হাসান সোহান, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক ইসহাক ভূঁইয়া, সহ–যোগাযোগ সম্পাদক ওবায়দুল সালমান, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক ফজলে রাব্বি তাওহিদ এবং পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ।
এছাড়া পাঁচ নির্বাহী সদস্য পদেও জয়ী হয়েছেন একই প্যানেলের জান্নাতুল ফেরদাউস সানজিদা, সালমান সাকিব, আকাশ দাশ, সোহানুর রহমান সোহান ও আদনান শরিফ।
চাকসু নির্বাচনে বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়। ব্যালট পেপারে ভোট শেষে ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) পদ্ধতিতে গণনা করা হয়। পুরো প্রক্রিয়া সরাসরি দেখানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ছিল ১৪টি এলইডি স্ক্রিন।
নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন জানান, অমোচনীয় কালি মুছে যাওয়াসহ বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ বাদে নির্বাচন সার্বিকভাবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে।
এবার চাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ২৭ হাজার ৫১৬ জন। তাদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১৭ হাজার ৭১৭ জন—ভোটের হার প্রায় ৬৫ শতাংশ।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে