শাফিন আহমেদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী শাফিন আহমেদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (২৪ জুলাই)। ২০২৪ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘মাইলস’-এর এই প্রধান ভোকালিস্ট ও বেস গিটারিস্ট। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
গত বছরের ২০ জুলাই ভার্জিনিয়ায় একটি স্টেজ শোতে অংশ নেয়ার কথা ছিল শাফিন আহমেদের। তবে অনুষ্ঠান শুরুর আগেই হোটেল কক্ষে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসায় অবস্থার সাময়িক উন্নতি হলেও পরদিন ভোর রাতে দ্বিতীয় দফা হার্ট অ্যাটাকে তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। পরে লাইফ সাপোর্টেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
শাফিন আহমেদ ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন এক সংগীতপ্রতিভাসম্পন্ন পরিবারে। তার মা ছিলেন খ্যাতিমান নজরুলসংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগম এবং বাবা বিখ্যাত সুরকার কমল দাশগুপ্ত। ছোটবেলা থেকেই সংগীত চর্চা শুরু করেন শাফিন। পিতার কাছ থেকে ধ্রুপদী সংগীত ও মায়ের কাছ থেকে নজরুলসংগীতে হাতেখড়ি নেয়ার পর যুক্তরাজ্যে পড়ালেখার সময় পাশ্চাত্য সংগীতের প্রতি ঝোঁক বাড়ে তার।
দেশে ফিরে বড় ভাই হামিন আহমেদের সঙ্গে গড়ে তোলেন ব্যান্ড ‘মাইলস’, যেটি পরবর্তীতে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও স্থায়ী ব্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। মাইলসের অধিকাংশ গানেই প্রধান কণ্ঠ ছিল শাফিনের। পাশাপাশি বাজাতেন বেস গিটারও। তার কণ্ঠে ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘ফিরে এলে না’, ‘হ্যালো ঢাকা’— এসব গান আজও বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীত ইতিহাসের ধ্রুপদী সম্পদ।
একক শিল্পী হিসেবেও সাফল্য অর্জন করেন শাফিন আহমেদ। বিশেষভাবে তার গাওয়া ‘আজ জন্মদিন তোমার’ গানটি আজও জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে।
সংগীতের বাইরেও ছিলেন সক্রিয় তিনি। ২০১৭ সালে তিনি জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এ এবং ২০১৮ সালে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকেন কিছু সময়।
এক বছর পেরিয়ে গেলেও শাফিন আহমেদের কণ্ঠ, সুর ও সংগীতদর্শন সংগীতপ্রেমীদের মনে রয়ে গেছে গভীর প্রভাব নিয়ে। নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের কাছে তিনি অনুকরণীয় এক ব্যক্তিত্ব, যিনি ব্যান্ডসংগীতকে মূলধারায় প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে