সাগর-রুনি হত্যা: তানভীরকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়েছে পিবিআই
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় ২০১২ সালে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি তানভীর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে ঢাকার একটি আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার (২১ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালতে এই আবেদন জমা দেয়া হয়। আদালত ৮ জুলাই এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছেন। একইসঙ্গে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমাও ওই তারিখ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে মামলার তদন্ত সময় ১১৯ বার বাড়ানো হলো।
পিবিআইয়ের আবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রুনির সঙ্গে তানভীরের সাক্ষাৎ হয়। সেদিন বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে পন্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের আশেপাশে তাদের অবস্থান ধরা পড়ে সিসিটিভি ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে। তানভীর পরে রুনিকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান এবং সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় নামিয়ে দেন।
পরের দিন, ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে সাগর-রুনির মৃতদেহ তাদের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, মৃত্যুর খবর জানার পরও তানভীর দাফনে (জানাজায়) অংশ নেননি কিংবা নিহতদের পরিবারের কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করেননি। তার বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকায় তাকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি বলে মনে করছে পিবিআই।
মামলার তদন্তে এখন পর্যন্ত ৭০ জনের বেশি ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এদের মধ্যে আছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মশিউর রহমান, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক নৌবাহিনী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহেল, এবং মামলার অন্যান্য আসামি হুমায়ুন কবির ও পালাশ রুদ্র পাল।
সাগর ছিলেন মাছরাঙা টিভির বার্তা সম্পাদক এবং রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তারা রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ, পরে ডিবি, তারপর র্যাব এবং সর্বশেষ হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে পিবিআই তদন্ত করছে।
২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর চার সদস্যবিশিষ্ট একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়, যার আহ্বায়ক করা হয়েছে পিবিআই প্রধানকে। এই টাস্কফোর্সকে ২০২৫ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে: কামরুল ইসলাম ওরফে আরুন, আবু সাইদ, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু, পালাশ রুদ্র পাল, আনামুল হক ওরফে হুমায়ুন কবির এবং তানভীর রহমান খান। এর মধ্যে তানভীর ও পালাশ জামিনে মুক্ত থাকলেও বাকিরা এখনও কারাগারে রয়েছেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে