Views Bangladesh Logo

আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি, জোট করলেও দলীয় প্রতীকেই ভোট

ণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। সোমবার আইন মন্ত্রণালয় এ অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করে। নতুন বিধান অনুযায়ী, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জোট গঠন করলেও নির্বাচনে অংশ নিতে হবে নিজস্ব দলীয় প্রতীকে।

এই বিধানের বিরোধিতা জানিয়েছে বিএনপি ও ১২ দলীয় জোট। তারা নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও আইন মন্ত্রণালয়ে লিখিত আপত্তি জমা দিয়েছিল। বিএনপি জানিয়েছিল, জোটভিত্তিক নির্বাচনে অভিন্ন প্রতীক ব্যবহারের সুযোগ বাতিল হলে রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুণ্ন হবে। তবে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সংশোধনের পক্ষে অবস্থান নেয়। শেষ পর্যন্ত তাদের অবস্থান বহাল রেখেই অধ্যাদেশ জারি করা হলো।

রাজনৈতিক অঙ্গনে এ সিদ্ধান্তে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। গণভোটের সময়সূচি ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে চলমান বিরোধের মধ্যেই বিষয়টি দলগুলোর মধ্যে বিভাজন আরও স্পষ্ট করেছে। জামায়াত ও এনসিপি অভিযোগ করেছে- বিএনপি সরকারের সঙ্গে ‘গোপন সমঝোতা’ করেছে।

১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকেও এই সংশোধনের বিরোধিতা করে সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর)-এর মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকনের সই করা চিঠিতে বলা হয়, জোটবদ্ধ দলগুলোর পছন্দ অনুযায়ী প্রতীক বেছে নেওয়ার অধিকার থাকা উচিত। এই প্রচলিত প্রথা পরিবর্তন রাজনৈতিকভাবে অনভিপ্রেত।

চিঠিতে আরও বলা হয়, অতীতে জোটভিত্তিক নির্বাচনে দলগুলো একে অন্যের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, তাতে কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি। অথচ এবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা ছাড়াই এ ধরনের বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে এনসিপি সংশোধিত আরপিও বহাল রাখার দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়ে আলাদা চিঠি দিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বিএনপির পক্ষ নিয়ে সংশোধনের বিরোধিতা করছেন; এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করারও দাবি জানানো হয়।

সরকার গঠিত নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতেই আরপিও সংশোধনের উদ্যোগ নেয় নির্বাচন কমিশন। ২৩ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সংশোধনী খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে উপদেষ্টাদের মধ্যে এ নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। কেউ কেউ বলেন, ইসিতে যেহেতু বিভিন্ন দল আপত্তি জানিয়েছে, তাই বিষয়টি আরও পর্যালোচনা দরকার।অন্যরা মনে করেন, এখন পরিবর্তন আনলে নতুন বিতর্ক তৈরি হবে।

সোমবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয়কে সংশোধনীর প্রভাব ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে অধ্যাদেশ অনুযায়ী, আগের মতো জোটবদ্ধ প্রার্থীরা আর অভিন্ন প্রতীকে ভোট করতে পারবেন না। অর্থাৎ, জোটভুক্ত হলেও প্রত্যেক প্রার্থীকে নিজ দলের প্রতীকেই ভোট করতে হবে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ