রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মিয়ানমারেই: প্রেস সচিব
মিয়ানমারের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাপ্তি টানব। এর সমাধান মিয়ানমারেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, কিন্তু এটা করার জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করা, যেটার জন্য কূটনৈতিক যে চাপ প্রয়োজন ছিল তা ২০১৭-১৮ সালের পর আমরা খুব একটা করি নাই। না করার কারণ হচ্ছে আমরা আমাদের ফরেন পলিসিকে আউটসোর্স করে রেখেছিলাম।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে ‘শিরোনামের বাইরে: নতুন চোখে রোহিঙ্গা সংকট’ শীর্ষক সাংবাদিকদের এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, কারো কাছে যদি আপনি ফরেন পলিসি বন্ধক দিয়ে রাখেন তাহলে আসলে আপনার হাত পা বাঁধা হয়ে যায়, কতদূর তাহলে এগোতে পারবেন, কার সঙ্গে কথা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এই আউটসোর্স করার কারণে এই সংকট পুরোপুরি মাটির নিচে চাপা পড়ে গেছে।
প্রেস সচিব বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা যে একটা খুবই বাজে মানবিক সংকট এই বিষয়টা সেভাবে সামনে আসছে না। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ভাবলেন যে, এই ইস্যুটাকে কীভাবে বৈশ্বিকভাবে সামনে আনা যায়। এই বিষয়টা যেন সবার মুখে মুখে আসে। রোহিঙ্গা সংকট যেন আবার খবরের শিরোনাম হয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সবাই যেন এই সংকট নিয়ে কথা বলে। সেই আলোকেই প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছিলেন। অনুরোধের পর আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিজে নেতৃত্ব দেবেন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা কথা বলবেন। আমরা আশা করছি ১৫০টির বেশি দেশ এতে অংশ নেবে। আশা করছি সম্মেলনটি রোহিঙ্গা সংকটের একটি সমাধানের দিকে যাবে।
তিনি বলেন, এটার যে একটা দীর্ঘমেয়াদি টেকসই সমাধান দরকারে এবং তার জন্য যে ব্যাপক কূটনৈতিক চাপ দরকার, সেটা সত্যিকার অর্থে মিসিং ছিল। সেই কাজটি অন্তর্বর্তী সরকার যথেষ্ট চেষ্টা করছে। আমাদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এই ইস্যু নিয়ে অনেক দেশে আলাপ করেছেন, অনেক জায়গায় গেছেন। অনেক বৈশ্বিক শক্তির সঙ্গে কথাবার্তা হচ্ছে। দেখা যাক, আমাদের আশাটি আছে, সেই আলোকে জাতিসংঘ মহাসচিব এই বছর মার্চে পুরো একটা দিন রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ছিলেন, রোজা রেখেছিলেন রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে। আমরা আশা করছি এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট আবার বৈশ্বিক মানচিত্রে ফিরবে, সবাই এটি নিয়ে জরুরি দৃষ্টি দেবেন।
জাতিসংঘ অধিবেশনে রাজনীতিবিদরা কেন যাচ্ছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে আমাদের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলগুলো সম্পৃক্ত ছিল। এই রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের অংশীজন। প্রধান উপদেষ্টা নিজে রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এবার জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক বিশ্বনেতা সেখানে আসবেন, সেখানে তাদের সঙ্গে মিশতে পারবেন। তারপর রোহিঙ্গা সম্মেলনে অংশ নিতে পারবেন।
শুধু তিনটি দল কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে তো আপনাদের রিসোর্সের সীমাবদ্ধতা দেখতে হবে। জাতিসংঘের অধিবেশন কিন্তু তিন মাস ধরে চলে, হয়তোবা সরকার ভেবে দেখবে পরে আবার নতুন কাউকে পাঠাতে হয় কি না।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে